শিয়া পরিচিতি।

আল্লামা অধ্যক্ষ  হাফেজ আব্দুল জলিল রাহমাতুল্লাহি আলাইহির ক্বলম থেকে ঃ------ 

★নাহমাদুহু   ওয়ানুছাল্লী আলা  রাসুলিহিল কারীম
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

শিয়াপরিচিতি
====
ফির্কাসৃষ্টির  ভবিষ্যৎদ্বানী: (হাদীস)      -  নবী করিম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি  ওয়া     সাল্লাম    ইরশাদ     করেছেন-      ”আমার উম্মত  অচিরেই তিয়াত্তর   ফির্কায়  বিভক্ত হয়ে   যাবে   - তন্মধ্যে একটি ছাড়া বাকী বাহাত্তরটি জাহান্নামী হবে”। উক্ত বাহাত্তরের মধ্যে   শিয়া ফির্কা একটি। শিয়া  ফির্কা পূন: ৬৩ টি উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়ে।

ফির্কাসৃষ্টির ইতিকথা
=========
ভূমিকা:ইসলামে  বিভিন্ন    ফির্কার  সৃষ্টি    হয়  খিলাফতে  রাশেদা যুগের     শেষের      দিকে।    ত্রিশ  বৎসর খিলাফতকালের মধ্যে  প্রথম   পঁচিশ বৎসর পর্যন্ত   কোন  ফির্কার  অস্তিত্ব ছিলনা। হযরত   ওসমান   রাদ্বিয়াল্লাহু     আনহু            শহীদ হওয়ার সাথে সাথেই সলামী রাষ্টে মুসলমানদের মধ্যে ভূল বুঝাবুঝি ওঅনৈক্য  মাথা চাড়া দিয়ে  উঠে। হযরত ওসমান  রাদ্বিয়াল্লাহু  আনহু এর ১২ বৎসর খিলাফতের শেষ      ছয় বৎসরে      জনৈক ইয়াহুদী    গুপ্তচর মুসলমান সেজে   হযরত              ওসমান          রাদ্বিয়াল্লাহু     আনহু    এর খিলাফতের বিরুদ্ধে লোকদেরকে উস্কানী দিতে থাকে। তার নাম আবদুল্লাহ ইবনে  সাবা। তার দেশ ইয়েমেন। সানা  শহরে ছিল তার আবাসভূমি। ইসলামী রাষ্ট্র তখন আরব ভূখন্ড ছেড়ে        আফ্রিকা,  ইউরোপের   সাইপ্রাস, এশিয়া         মহাদেশের  পারশ্য, এশিয়া  মাইনর  ও   চীন সীমান্ত পর্যন্ত এবং দক্ষিন এশিয়ায়  বর্তমান      পাকিস্তান সীমান্ত     পর্যন্ত  বিস্তৃত     ছিল।    আরবের     চেয়ে   অনারব মুসলমানের সংখ্যা ছিল বেশী।   আবদুল্লাহ ইবনে সাবা মিশর,         ইয়েমেন,   কুফা,   বসরা,    খোরাসান-   প্রভৃতি অঞ্চলে ব্যাপক  সফর করে বক্তৃতা ও বিবৃতির মাধ্যমে হযরত  ওসমানের    খিলাফতের      বিরুদ্ধে লোকদেরকে উত্তেজিত করে তোলে। শুরু  হয় ভূল বুঝাবুঝির। মাথা চাড়া দিয়ে     উঠতে থাকে  বিদ্রোহ।       এভাবে  মুনাফিক আবদুল্লাহ ইবনে সাবার প্রথম পরিকল্পনা সফল হলো। দুর্বল চিত্তের মুসলমানদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টির প্রথম বীজ  এভাবেই বপন করতে  সক্ষম   হয়েছিলো ইয়াহুদী মুনাফিক আবদুল্লাহ ইবনে সাবা। কিন্তু সে রইলো ধরা- ছোঁয়ার  বাইরে। যেমনটি ঘটছে       বর্তমানে  -           ইহুদি নাসারা  ষড়যন্ত্রের  বেলায়।   তারা  মুসলমানদের    মধ্যে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে কলকাঠি নাড়ে।

হযরতওসমান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর শাহাদাতের পর খলিফা নিযুক্ত       হন  হযরত   আলী  রাদ্বিয়াল্লাহু   আনহু।  হযরত আলী  (কাররামাল্লাহু  ওয়াজহাহু) -এর ক্ষমতা  সুসংহত হওয়ার     পূর্বেই   হযরত      ওসমান     রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর শাহাদাতের বিচার    অনুষ্ঠানের দাবী       তোলা হয়  এবং উক্ত বিচার      হযরত আলী      রাদ্বিয়াল্লাহু     আনহুর   প্রতি আনুগত্য  স্বীকারের পূর্বশর্ত হিসাবে আরোপ করা হয়। আবদুল্লাহ   ইবনে       সাবা        এ     দাবীর    পেছনে    ইন্দন জোগাতে  শুরু       করলো। কিন্তু  প্রকাশ্যভাবে মুনাফিক্বী চাল  এঁটে  সে  হযরত     আলী     রাদ্বিয়াল্লাহু   আনহু     এর আস্থাভাজন    হওয়ার        চেষ্টা করলো।     এঅবস্থায়  ঘটে গেলো   দু:খজনক      দুটি  ঘটনা।  একটি   হলো     -  জঙ্গে জামাল বা   উষ্ট্রের  যুদ্ধ।  দ্বিতীয়টি হলো  জঙ্গে সিফফিন বা সিফফীনের যুদ্ধ। প্রথমটির নেতৃত্ব  দেন মা আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু  আনহা  এবং দ্বিতীয়টির নেতৃত্ব দেন হযরত মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। এই দুই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে দুই বাতিল ফির্কার  সূচনা  হলো।   একটির     নাম ”শিয়া ফির্কা”; দ্বিতীয়টির  নাম ”খারিজী ফির্কা”। শিয়া       ফির্কা হলো   হযরত    আলীর   পক্ষে  এবং  খারিজীরা  বিপক্ষে। তারা      এমন সব  জঘন্য আক্বীদার   সৃষ্টি    করলো- যার কোন ভিত্তি ইসলামে            খুঁজে  পাওয়া  যায়না। খারিজী ফির্কার  প্রথম               প্রতারণামূলক  শ্লোগান    ছিল   পবিত্র কোরআনের     একটি           পবিত্র   বাণী  ”ইনিল হুকমুইল্লা লিল্লাহ”         অর্থাৎ    আল্লাহর হুকুমত ছাড়া          অন্যকোন হুকুমত আমরা মানিনা”।

আল্লাহরকালামের মনগড়া  ব্যাখ্যা করে খারিজীরা হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু  আনহুর            খিলাফতকে     অস্বীকার         করে বসলো। এই  খারিজী দল যুগে যুগে ইসলামী রাষ্ট্রে বহু ফিতনা সৃষ্টি করেছে।   এই দলেই পয়দা হয়েছে  ইবনে তাইমিয়া      ও      মুহাম্মাদ     ইবনে  আবদুল ওহাব নজদী (শামী, তারিখে নজদ ও হিজায)। বর্তমানকালে আবুল আ'লা  মউদুদীকেও  নব্যখারিজী  ফির্কা    বলে অভিহিত করেছেন   দেওবন্দী         উলামাগনসহ  সর্বস্তরের   উলামা মাশায়িখগণ। বিস্তারিত বিবরণ শর্ষিনা থেকে  প্রকাশিত ”মউদুদী জামাতের  স্বরূপ”  (১৯৬৬  ইং) পুস্তকে    দেখা যেতে পারে।

শিয়াফির্কা  প্রথমদিকে  কেবলমাত্র  হযরত  আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর  স্বপক্ষের লোকদেরকেই বলা হত।    তাঁদেরকে বলা  হতো  শিয়া মুখলিসীন।       এদের মধ্যে   সাহাবায়ে কেরামগণও    ছিলেন।    তাঁদের  কোন    পৃথক      আক্বীদা ছিলনা।   পরবর্তীতে হযরত  আলী রাদ্বিয়াল্লাহু     আনহুর যামানাতেই    শিয়াদের      আরেকটি শাখার  সৃষ্টি   হলো। এদেরকে    বলা      হতো        তাফলিদিয়া     শিয়া    বা  অন্য সাহাবীগণের উপর হযরত আলী রদ্বিল্লাহু আনহু শ্রেষ্ঠত্ব আরোপকারী   শিয়া।   এরপর  সৃষ্টি   হলো  তৃতীয়    শিয়া ফির্কা। এদের নাম হলো ”ছাব্বাইয়া” ও ”তাবাররাইয়া” -  যারা   অন্য   সাহাবীগণকে গালিগালাজ করতো।   এই দলের নেতাসেজে  বসলো   ইহুদি মুনাফিক্ব    আবদুল্লাহ ইবনে  সাবা। এরপর   সৃষ্টি হলো শিয়াদের চতুর্থ  ফির্কা ”ঘালী শিয়া” বা চরম পন্থী শিয়া।

এইঘালী  বা চরমপন্থী শিয়া  পরবর্তীতে ৬৩ টি উপ-শাখায় বিভক্ত হয়েছে।   এদের মধ্যে  ইমামিয়া,   ইসমাঈলীয়া, ইসনা আশারিয়া ও কারামাতা শিয়াগণই বেশী পরিচিত ও জঘন্য আক্বীদায় বিশ্বাসী।

(সূত্রঃ               আল-মিনহাতুল               ইলাহিয়া  -          তালখিছু তারজামাতুত      তুহফাতিল

প্রথম পর্ব
=======
শিয়াফির্কার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও আক্বীদা:
======
শিয়াসম্প্রদায়   -  যারা  হযরত আলী  কাররমাল্লাহু ওয়াজহাহু এর স্বপক্ষীয় ও অনুসারী বলে দাবি  করে  এবং    তাঁকে মহব্বত করে। তারা মূলত:   চার ফের্কায় বিভক্ত। যথা:

১।প্রথম যুগের আদি শিয়া বা মুখলিসীন শিয়া: 
হযরতআলী          রাদ্বিয়াল্লাহু       আনহু                 এর খিলাফতকালের (৩৫-৪০হিজরী)   মুহাজির,           আনসার   এবং     তাঁদের অনুসারী তাবিয়ীগণ এই দলের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। তাঁরা হযরত  আলীর   ন্যায্য প্রাপ্য  ও   মর্যাদার স্বীকৃতি  দাতা ছিলেন।  পক্ষান্তরে   তাঁরা   অন্য কোন   সাহাবীকে    ছোট করে  দেখানো   কিংবা তাঁদেরকে  গালিগালাজ  করা   বা কাফির  মনে     করা - ইত্যাদি দোষ- ত্রুটি  হতে    সম্পূর্ণ মুক্ত      ছিলেন।         কুরআনের     ব্যাখ্যায়      তাঁরা     হযরত আলীকেই   অনুসরণ করতেন। বাইআতুর  রিদওয়ানের মধ্যে শরীক চৌদ্দশত সাহাবীর মধ্যে আটশত সাহাবীই সিফফীনের যুদ্ধে হযরত আলীর পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন। তন্মধ্যে তিনশত সাহাবী শাহাদত বরণ করেন। অবশ্য কোন কোন  সাহাবী    উক্ত      যুদ্ধ        থেকে   নিজেদেরকে দূরত্বে    রেখেছিলেন  - শুধু সাবধানতা   অবলম্বন  করার জন্য।  তাঁরা   এসব        ঝামেলায়       নিজেদেরকে  জড়িত করেননি।  এঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বিশিষ্ট সাহাবী হযরত     আবদুল্লাহ    ইবনে    ওমর      রাদ্বিয়াল্লাহু  আনহু।

জঙ্গেজামাল       ও জঙ্গে  সিফফীনে হযরত   আলী   রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন সত্যের উপর  প্রতিষ্ঠিত। অনেকেই  পরে হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু   এর সাথে যোগদান না করার জন্য দু:খও      প্রকাশ   করেছিলেন।    শিয়া  শব্দটি কখন   থেকে প্রচলিত হয়  -   সে    সম্পর্কে  শাহ আবদুল আজিজ দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তোহফা ইসনা আশারিয়া    গ্রন্থে  বলেন:    ৩৭        হিজরী   সনে শিয়া   বা ”শিয়ীয়ানে আলী”              শব্দটি প্রচলিত হয়।   এই দলের কোন     পৃথক মতবাদ বা নিজস্ব  আক্বীদা ছিলনা। তাঁরা সর্ব বিষয়ে হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কে অনুসরণ করতেন।

২।তাফলিদিয়া শিয়া:
এইসম্প্রদায়ভূক্ত শিয়াগন সমস্ত সাহাবায়ে কেরামের উপর হযরত      আলী রাদ্বিয়াল্লাহু   আনহুকে   বেশী ফযিলত বা মর্যাদা দিতেন বলে এই  নামকরণ করা হয়। কিন্তু তাই বলে অন্য কোন সাহাবীকে গালি দেয়া  বা কাফির  বলা কিংবা  তাঁদের  প্রতি  বিদ্বেষ    পোষণ   করা   -    কোনটাই এঁদের  মধ্যে    ছিলনা। এই   সম্প্রদায়ের মধ্যে  অন্যতম উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব  ছিলেন আরবী নাহু বিদ্যার জনক আবুল আসওয়াদ দোয়ায়লী। তাঁর সাগরেদ আবু সাঈদ ইয়াহইয়া,  সালেম    ইবনে   আবু   হাফসা    (যিনি    ইমাম বাকের  রাদ্বিয়াল্লাহু  আনহু এবং  ইমাম    জাফর  সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু    আনহু থেকে             হাদীস  বর্ণনা   করেছেন), বিখ্যাত   অভিধান   ”ইসলাহুল  মানতিক”   প্রণেতা   আবু ইউসুফ  ইয়াকুব   ইবনে                              ইসহাক      -         প্রমুখ।

পরবর্তীকালেরবিখ্যাত   সূফী   সাধক       আল্লামা আবদুর    রহমান জামী রহমাতুল্লাহি    আলাইহি   এর        গ্রন্থাবলীতেও তাফদিলী মতবাদের কিছুটা  আভাস পাওয়া যায়।  এই তাফদিলী সম্প্রদায়ের  প্রকৃত   আত্মপ্রকাশ  ঘটে      প্রথম    সম্প্রদায় মুখলিসীন শিয়াদের     দুই কি তিন বৎসর    পরে  অর্থাৎ ৩৯ বা ৪০ হিজরী সনে।

বিশ্বস্তবর্ণনামতে দেখা        যায়   যে, হযরত   আলী     রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু   তাঁর খিলাফত   কালেই   টের    পেয়েছিলেন    যে, কিছু   কিছু   লোক   তাঁকে          হযরত  আবু  বকর   সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও   হযরত   ওমর  ফারুক  রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর উপর মর্যাদা  দিচ্ছেন।  সাথে  সাথে তিনি এ আক্বীদা পোষণ করা থেকে বারণ  করেন এবং বলেন - ”যদি     আমি কারও  মুখে একথা শুনি    যে, হযরত আবু বকর  ও  হযরত ওমরের উপর আমাকে মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে - তাহলে     আমি     তাকে  আশি  দোররা মারবো”। কোন  কোন বর্ণনায় দশ    দোররার  কথা উল্লেখ আছে।

৩।ছাব্বাইয়া বা তাবাররাইয়া শিয়া ফির্কা:
এইসম্প্রদায়ভূক্ত    শিয়াগণ    সালমান ফারসী,       আবু      যার গিফারী, মিকদাদ, আম্মার ইবনে  ইয়াসির     রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম         -            প্রমুখ    সাহাবীগণ      ব্যতীত    অন্য   সব সাহাবীগণকেই   গালিগালাজ  দিয়ে  থাকে।    এমনকি   - তারা             উক্ত  মুষ্টিমেয়   কয়েকজন        ছাড়া বাকি      সব সাহাবীকেই কাফির ও মুনাফিক বলে বিশ্বাস করে এবং গালিগালাজ   করে   থাকে।  তারা  এ       কথাও  বলে  যে, বিদায়ী   হজ্জ্ব      সমাপন          করে       নবী  করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি  ওয়া  সাল্লাম মদীনা শরীফে  প্রত্যাবর্তনকালে পথিমধ্যে   ”গাদীরে খুম”   নামক                  স্থানে    সাহাবায়ে কিরামকে        একত্রিত   করে     হযরত  আলী    রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু  এর  সম্পর্কে বলেছিলেন -    ”আমি  যার মাওলা, আলী ও তার মাওলা”।

তারামনে করে- নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি  ওয়া সাল্লাম এই    ভাষণের   দ্বারা হযরত  আলীকেই তাঁর          পরবর্তী খলিফা নিয়োগ করে  গেছেন। সুতরাং পরবর্তীকালে ঐ সময়ে        উপস্থিত    সাহাবীগণ   হুযুরের ইন্তিকালের   পর নাকি  প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ      করে       হযরত  আলীকে   খলিফা নির্বাচিত  না  করে     বরং  হযরত আবু     বকর সিদ্দীকের হাতে   বাইয়াত  করে    সকলেই মুরতাদ  শ্রেণীর কাফির হয়ে গেছেন (নাউযুবিল্লাহ)। এই  সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয় হযরত      আলীর        খিলাফতকালেই।  ইয়েমেনের  সানা প্রদেশবাসী   কুখ্যাত ইহুদি   মুনাফিক   আবদুল্লাহ ইবনে সাবার    কুমন্ত্রণা   ও উস্কানীতে  এই বদ   আক্বীদার সৃষ্টি হয়।  এ প্রসঙ্গে  সোয়াইদ নামক     জনৈক ব্যক্তি হযরত আলীর       খিদমতে      এসে     বললেন   যে,   আমি   একটি সম্প্রদায়কে      দেখেছি  -   ”তারা     হযরত   আবু          বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কে গালমন্দ করছে।         আপনি হয়তো   অন্তরে       অন্তরে  এ ধারণা    পোষণ      করেন।
দ্বিতীয় পর্ব
=======
ক্রমিক৪    - এর    ঘালী বা  চরমপন্থী শিয়াদের     শ্রেণী   বিভাগ: (২৪)

উপরেউল্লেখ করা হয়েছে যে, চতুর্থ ফির্কার শিয়াদেরকে ঘালী বা   চরমপন্থী শিয়া  বলা হয়।     এরা      পুনরায়   চব্বিশটি শাখায়  বিভক্ত হয়ে  পড়ে।  এদের মূল আক্বীদা হলো - ”হযরত   আলী-           ই-  খোদা”          (নাউযুবিল্লাহ)।     এই আক্বীদার  চুলচেরা          বিশ্লেষণ   করতে গিয়েই    তাদের মধ্যে  এই চব্বিশটি   উপ- শাখার      সৃষ্টি  হয়। সংক্ষেপে তাদের ইতিবৃত্ত ও আক্বীদা নিম্নে প্রদত্ত হলো:

১।সাবাইয়্যা শিয়া:    এরা  আবদুল্লাহ  ইবনে    সাবা  নামক ইহুদি    চরের অনুসারী।   চরমপন্থী  এই       শিয়া   গ্রুপের আক্বীদা   হলো -   ”হযরত   আলী     -ই-  খোদা”।  হযরত আলী শাহাদত   বরণ করার পর আবদুল্লাহ ইবনে সাবা প্রচার  করে         যে,   ”তিনি মরেননি -          ঘাতক আবদুর রহমান   ইবনে মূলজেম হযরত   আলীকে  শহীদ করতে পারেনি   -      বরং  একটি   শয়তান হযরত   আলীর সুরত ধারণ করেছিল। ইবনে মূলজেম তাকেই     হযরত আলী মনে    করে         কতল       করেছে। ঐ সময়    হযরত  আলী আকাশের   মেঘ মালায়   লুকিয়ে   যান   এবং   বর্তমানের মেঘের গর্জন  হযরত  আলীরই   গর্জন।  মেঘের   বিদ্যুত হচ্ছে   হযরত    আলীর          তরবারী     বা   কোড়া।        তিনি পৃথিবীতে আবার নেমে আসবেন     এবং   তাঁর  শত্রুদের থেকে প্রতিশোধ নেবেন”।

একারণেই    চরমপন্থী     এই     শিয়া গ্রুপ      মেঘের       গর্জন শুনলেই           বলে   উঠে  ”আলাইকাচ্ছালাম         আইয়ুহাল আমীর”  অর্থাৎ  হে    আমিরুল মুমিনীন!  আপনার উপর ছালাম বর্ষিত হোক। তাদের এ কুধারণা  কুসংস্কারেরই ফলশ্রুতি। তাদের ধারণা মতে যদি সত্যি সত্যি হযরত আলী  রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু মেঘ মালায় লুকিয়ে থাকতেন, তাহলে এখনই   তাঁর  শত্রুদের  নিপাত  করতেও  সক্ষম হতেন।   এত    দীর্ঘ প্রতীক্ষার  কি   প্রয়োজন?  (তোহফা ইসনা আশারিয়া)

২।মুফাদ্দালিয়া  শিয়া:    চরমপন্থী        দ্বিতীয়            শাখা   হলো মুফাদ্দাল সাইরাফী নামক নেতার অনুসারী দল।  প্রথম শাখার আক্বীদা তো এরা পোষণ করেই - তদুপরি আর একটু অগ্রসর হয়ে তারা বলে - ”হযরত আলীর সম্পর্ক আল্লাহর    সাথে ঐরূপ  -  যেরূপ  সম্পর্ক   ছিল   আল্লাহর সাথে ইছা নবী আলাইহিস সালামের”।

এদেরআক্বীদা আর খৃষ্টানদের আক্বীদা      এক।         আল্লাহ      ও বান্দাকে তারা এক মনে করে। তাদের আরো বিশ্বাস - নবুয়ত   ও  রিসালাতের  ধারা খতম হয়ে যায়নি। যেসব বুযর্গের সাথে লাহুতি  জগত (উর্দ্ধজগত) সম্মিলিত হয়, তাঁরা   হলেন       নবী।       এই     নবীগণ    যখন         মানুষকে হিদায়াতের আহবান জানান, তখন  তাঁদেরকে বলা হয় রাসুল।           এই  চরমপন্থী     মুফাদ্দালিয়া    গ্রুপ     থেকেই অতীতে          নবুয়ত  ও রিসালাতের  ভন্ড     দাবিদারদের উদ্ভব   হয়েছিল।         বর্তমানে কাদিয়ানী               গ্রুপ   এবং দেওবন্দ মাদ্রাসার           প্রতিষ্ঠাতা           কাছেম  নানুতবীও কুরআনের   খতমে নবুয়ত   সংক্রান্ত  আয়াতটির এভাবে অর্থ করেছে - ”তিনি নবীগণের ভূষণ ও আফযল নবী - তাঁকে            শেষ  নবী     মনে       করা       জাহেলদের   কাজ” (তাহযীরুন্নাছ)।

৩।ছারিগীয়া  শিয়া:   এই গ্রুপ ছারিগ  নামক  শিয়া নেতার অনুসারী।   দ্বিতীয়  মুফাদ্দালিয়া   গ্রুপ   এবং  এই  তৃতীয় গ্রুপের  মতবাদ প্রায় একই     রূপ।    তবে  পার্থক্য     শুধু এতটুকু   যে, দ্বিতীয়      গ্রুপের    মতে    যে  কোন  বুযুর্গের মধ্যেই   আল্লাহ   হুলুল (প্রবেশ) করতে    পারেন।      কিন্তু ছারিগীয়ারা  এই           হুলুল         বা প্রবেশ   নিম্ন           লিখিত পাঁচজনের  মধ্যেই  সীমাবদ্ধ       বলে    মনে  করে।   তাঁরা হলেন:  নবী    করিম    সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া    সাল্লাম, হযরত আব্বাছ,     হযরত    আলী, তাঁর  দুই ভাই   হযরত জাফর ও হযরত আকিল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম।

৪।বাজিইয়া   শিয়া:  চরমপন্থী ঘালী   শিয়াদের       চতুর্থ  দল হলো বাজিইয়া গ্রুপ।  বাজি ইবনে  উইনুছ  নামের এক শিয়া        নেতার   অনুসারি এরা   এদের       আক্বীদা হচ্ছে: ”শুধুমাত্র  ইমাম জাফর   সাদেক   রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর মধ্যেই  খোদায়ীত্ব  প্রবেশ   করেছে - অন্য কারও মধ্যে নয়।   তাদের       মতে  - আল্লাহ  তায়ালা এক           ব্যক্তির মধ্যেই  প্রকাশিত হয়েছেন  মাত্র।   তবে  তিনি  দেহধারী নহেন”।   তারা বলে   -    ”ইমাম জাফর     সাদেকের   পর অন্য কোন শিয়া ইমাম খোদা হতে  পারবেন   না। তবে তাদের নিকট ওহী অবতীর্ণ হবে এবং তাদের মেরাজও সংঘটিত হতে পারে”।

৫।কামিলিয়া      শিয়া:  আবু কামিল    নামক   জনৈক       শিয়া নেতার অনুসারী এই দল। এজন্য তাদেরকে কামিলিয়া নামে   আখ্যায়িত   করা হয়।  এদের  চরমপন্থী    আক্বীদা হচ্ছে  ”আত্মা এক দেহ  হতে অন্য দেহে প্রবেশ  করতে পারে। কোন দেহ মরে গেলে বা ধবংস হয়ে গেলে তার আত্মা     অন্য দেহ ধারণ করতে পারে”। তাদের   ধারণা মতে ”আল্লাহর   পবিত্র     আত্মা   প্রথমে   আদমের   মধ্যে সন্নিবেশিত      হয়েছিল।         ক্রমান্বয়ে    শীশ   পয়গাম্বরের মাধ্যমে       অন্যান্য    নবীগণের  মধ্যেও আল্লাহর    পবিত্র আত্মা স্থানান্তরিত হয়েছে”। তারা বলে - ”যেসব সাহাবা হযরত আলীর খিলাফত স্বীকার করেননি - তারা সবাই কাফির   এবং  হযরত  আলীও  কাফির     -  কেননা   তিনি তাঁর    ন্যায্য অধিকার  দাবী  করেননি”।    (নাউযুবিল্লাহ)

এরাঅভিমানী    ও       হতাশ   প্রেমিক       শিয়া।   নেতার   উপর অভিমান  করেই   তারা নেতার বিরুদ্ধে কুফরী  ফতোয়া জারি করে বসে আছে।

৬।মুগীরিয়া   শিয়া:    এই     চরমপন্থী  শাখাটি   হলো   মুগীরা ইবনে সাঈদ     আজারীর         অনুসারী।      এদের আক্বীদা নিম্নরূপ:  (ক) আল্লাহ স্বশরীরী   স্বত্বা।  আল্লাহর আকার একজন  পুরুষের     আকারের মত। তাঁর  মাথায়    নূরের টুপি আছে। তাঁর ক্বলব আছে। সেখান থেকেই যাবতীয় হিকমত  উৎসারিত  হয়ে      থাকে।    (খ) শয়তান হযরত আবু বকর      ও হযরত  ওমরকে    কুফরী করার পরে চির পথভ্রষ্ট করে দিয়েছে ।
নাউজুবিল্লাহ  ।

তৃতীয় পর্ব
=======
ইমামিয়া শিয়া বা ইমামপন্থী শিয়াদের  ৩৫ টি উপদল:
======
পূর্বেউল্লেখ    করা হয়েছে  যে,       প্রথম যুগে  শিয়াগণ   মূলত: চারটি গ্রুপে  বা শ্রেণীতে    বিভক্ত ছিল। তারা হলো (১) মুখলিসীন    (২)  তাফদিলীয়া (৩)    ছাব্বাইয়া এবং  (৪) ঘালিয়া। চতুর্থ গ্রুপটি হযরত আলী ও তাঁর বংশধরদের মধ্যে কোন           না     কোন    প্রকারে  খোদায়িত্ব   আরোপ করতো। এরা চরমপন্থী।     এরা         পরবর্তীতে        ২৪ টি উপদলে বিভক্ত হয়ে  পড়ে  -  যা  এই    মাত্র    আলোচনা করা  হয়েছে।                 তাদের         শেষোক্ত           দলের     নাম ইমামিয়াপন্থী শিয়া। এই  ঘালি উপদলটি পরবর্তীকালে আক্বীদা ও  আমলের ক্ষেত্রে  পুণরায় ৩৫ টি  উপশাখায় বিভক্ত  হয়ে   যায়।   বক্ষমান  আলোচনায়  তাদের  শ্রেণী বিন্যাস    ও আক্বীদা    বিশ্বাস পর্যালোচনা     করা   হলো।

১।হাসানী    শিয়া:   এই  উপদলটি ইমামিয়া  শাখার  একটি দল। এদের    আক্বীদা    হলো     -        ”হযরত  আলীর  পর ইমামত  ও   নেতৃত্ব  শুধু     ইমাম                  হাসান      ও     তাঁর বংশধরগণের      মধ্যেই    সীমাবদ্ধ।          ইমাম     হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু অথবা তাঁর বংশধরগণের মধ্যে কেউ এ  পদের    মালিক       নন”।  এদের  বিশ্বাস মতে  হযরত ইমাম হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু শহীদ হওয়ার পর তাঁর পুত্র দ্বিতীয় হাসান   তাঁর স্থলাভিষিক্ত  ছিলেন। ক্রমান্বয়ে এই ধারা তাঁর পুত্র আবদুল্লাহ, তাঁর পুত্র নাফছে যাকিয়া ও ইব্রাহীম পর্যন্ত  চালু ছিল। শেষোক্ত দু'জন আব্বাসীয় খলিফা  আল   মনসুর  এর  যুগে   আব্বাসীয় খিলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ  ঘোষণা  করে    শাহাদাত বরণ   করেন। আরব          ও   আজমে  তাদের    অনুসারী         ছিল     প্রচুর। আব্বাসীয়   রাজতন্ত্রের  বিরুদ্ধে  তাঁরা ছিলেন   সোচ্চার। ইমাম   আবু    হানিফা  রহমাতুল্লাহি    আলাইহি        নাফছে যাকিয়াকে        গোপনে          সহযোগিতা করতেন। তাঁদের শাহাদতের অনেক পরে ১৯৫ হিজরী সনে হাসানী শিয়া গ্রুপটির জন্ম হয়। এরা উপরোক্ত  ছয় জনের ইমামতে বিশ্বাসী। এটা  তাদের     মনগড়া আক্বীদা   -  যা  পরবর্তী যুগে গড়ে উঠেছে।

২।হাকামিয়া      শিয়া:  হিশাম      ইবনে   হাকাম  নামীয় শিয়া নেতার অনুসারীগণকে হাকামিয়া শিয়া বলা হয়। এদের চরমপন্থী আক্বীদা হলো           - ”ইমাম হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু        এর  পর          ইমাম   হোসাইন,     ইমাম    জয়নুল আবেদীন,          ইমাম        বাকের,       ইমাম জাফর  সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু    আনহুমা  পর্যন্তই  ইমামতের     পদ    সমাপ্ত। এরপর   আর কোন ইমাম নেই”। এ প্রশাখার  সৃষ্টি   হয় ১০৯ হিজরীতে।

৩।ছালিমিয়া     শিয়া:    হিশাম    ইবনে    ছালিম  নামের শিয়া নেতার    অনুসারীরা     ছালিমিয়া   শিয়া    নামে   পরিচিত। ইমামদের ক্ষেত্রে  হাকামিয়া    প্রশাখার   আক্বীদা পোষণ করলেও        এরা        আক্বীদাগত           দিক  থেকে     পৃথক। হাকামিয়া  প্রশাখার আক্বীদা  হচ্ছে      - ”আল্লাহ   তায়ালা দীর্ঘ  দেহধারী   -  দৈর্ঘ্য,  প্রস্থ এবং   উচ্চতা বিশিষ্ট   এক মহান সত্বা”। কিন্তু     ছালিমিয়া  শিয়াদের বিশ্বাস হচ্ছে - ”মানুষের আকৃতিতেই আল্লাহ আকৃতি   ধারণকারী  এক সত্বা”। ১১৩ হিজরীতে এদের উদ্ভব হয়।

৪।শয়তানিয়া    বা        নোমানিয়া  শিয়া:      মোহাম্মাদ   ইবনে নোমান   ছায়রাফী                নামের নেতার   অনুসারীদেরকে শয়তানিয়া শিয়া বলা    হয়।  কেননা, মোহাম্মাদ    ইবনে নোমানের    উপাধী  ছিল       ”শয়তানুত      তাক”।   অবশ্য শিয়ারা তাকে বলতো -  ”মোমেনুত তাক”। এই  দলের ইমামতের  ক্ষেত্রে ইমাম     জাফর    সাদেক      রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর ছেলে ইমাম মুছা কাযেম রাদ্বিয়াল্লাহু   আনহু পর্যন্ত ইমাম স্বীকার করে। ছালিমিয়া গোত্রের ন্যায় এরা আল্লাহকে মানুষের   আকৃতি ধারণকারী এক  স্বত্বা  বলে বিশ্বাস করে। এদের জন্ম হয় ১১৩ হিজরীতে।

৫।জারারিয়া    শিয়া:  ১৪৫    হিজরীতে       এই     নূতন    শিয়া ফির্কার সৃষ্টি হয়। কুফার অধিবাসী জারার ইবনে আউন নামের      জনৈক  শিয়া       এদলের        নেতা।       হাকামিয়া শিয়াদের    ন্যায়   এরা ইমাম জাফর সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু    পর্যন্ত    ইমাম  মান্য    করে।   এই    দল         আল্লাহ তায়ালার      গুনাবলী       বা ছিফাত    সমূহকে        অবিনশ্বর (কাদীম)        বলে    স্বীকার     করেনা  -        বরং   নশ্বর       বা পরিবর্তনশীল    (হাদেছ)  বলে         মনে  করে।      আদিতে আল্লাহর ছিফাত      ছিলনা -   পরে  হয়েছে  বলে      এদের ধারণা।

৬।বাদাইয়া   শিয়া:    এরা      প্রথম ছয়জন     ইমামকে   মানে (হযরত      আলী,  হাসান,    হোসাইন, জয়নুল আবেদীন, ইমাম  বাকের ও      জাফর  সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) এদের  ধারণা -     আল্লাহ  তায়ালা    প্রথমে কোন  বিষয়ে সিদ্ধান্ত    নিয়ে  কাজটি   সৃষ্টি  করে       পরে      মুছলিহাতের পরিপন্থী মনে করে কখনও কখনও লজ্জিত হন। যেমন ইসলামের    প্রথম    তিন   খলিফা         নির্বাচিত করে  পরে আল্লাহ   তায়ালা   লজ্জিত          হয়েছিলেন (নাউযুবিল্লাহ)। এদের জন্ম ১৪৫ হিজরীতে।

৭।মুফাউওয়াজা শিয়া: এরাও ছয় ইমামে বিশ্বাসী। এদের আক্বীদা হচ্ছে   - ”আল্লাহ  তায়ালা   মোহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া   সাল্লামের  হাতে দুনিয়া    সৃষ্টির      দায়িত্ব অর্পন   করে   দিয়েছেন”। তাদের  কেউ         কেউ   আবার হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর উপর সৃষ্টির দায়িত্ব অর্পনের কথায় বিশ্বাস করে। আবার কেউ কেউ বলে - রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত আলী  রাদ্বিয়াল্লাহু        আনহু উভয়ের    উপরই  যৌথভাবে পৃথিবী  সৃষ্টির দায়িত্ব অর্পন করা হয়েছে।    এদের  জন্ম ১৪৫ হিজরীতে।

৮।ইউনুছিয়া শিয়া: ইরানের  কুম শহরের  বাসিন্দা  ইউনুছ ইবনে  আবদুর      রহমান   নামীয়       জনৈক  শিয়া নেতার অনুসারী এই দল। এরাও  ছয় ইমামে বিশ্বাসী। আল্লাহ সম্পর্কে  এদের বিশ্বাস  হচ্ছে  - ”আল্লাহ তায়ালা  প্রকৃত ও শাব্দিক অর্থেই আরশের  উপরেই সমাসীন । 
চতুর্থ পর্ব
=======
শিয়াদের১২ টি ভ্রান্ত আক্বীদা:
=====
শাহআবদুল        আজীজ      দেহলভী     রহমাতুল্লাহি     আলাইহি তোহফায়ে ইসনা   আশারিয়া গ্রন্থে শিয়া  ফির্কা  সমূহের কতিপয়    গোমরাহ     আক্বীদা     উল্লেখ করেছেন।    যথা:

১।শিয়াদের  মতে: যুগে   যুগে  নবী    প্রেরণ   করা  আল্লাহর উপর   ওয়াজিব      বা     বাধ্যতামূলক।   আহলে  সুন্নাতের মতে, ইহা  আল্লাহর            অনুগ্রহ   -      বাধ্যতামূলক  নয়। কেননা এমন যুগও ছিল  - যখন কোন  নবী ছিলেন না। যেমন  হযরত   ইছা ও     আমাদের নবীর মধ্যবর্তী ৫৭০ বৎসরের    যুগ। কোন   কাজ  আল্লাহর     উপর   ওয়াজিব হলে   তা করতে      আর      একজন       আল্লাহর     প্রয়োজন (নাউযুবিল্লাহ)।   সুতরাং      কোন   কাজ  খোদার        উপর ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত -  ইত্যাদি হতে পারেনা। এসব হুকুম বান্দার বেলায় প্রযোজ্য।

২।ইমামপন্থী    শিয়াগণ    বলে:   হযরত    আদম  আলাইহিস সালামসহ          সাতজন উচ্চস্তরের        পয়গাম্বর        ব্যতিত অন্যান্য   নবীগণের   চেয়ে   হযরত          আলী   রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু উত্তম (নাউযুবিল্লাহ)।

আহলেসুন্নাত ওয়াল    জামায়াতের মতে,   নবীগণ ফেরেস্তাদের চেয়েও  উত্তম।  হযরত       আলী নায়েবে নবী   ও    উম্মত মাত্র।  উম্মত     কোন    দিনই      নবীর    চেয়ে    উত্তম  হতে পারেনা।

৩।ইমামিয়া  শিয়াদের মতে, নবীগণের  পক্ষে কোন  কোন সময় মিথ্যা  কথা বলা  বা   কারও উপর মিথ্যা  অপবাদ দেওয়া   জায়েয   -   বরং  ওয়াজিব হয়ে   পড়ে।     তাদের পরিভাষায় ইহাকে ”তুকইয়া”বলে।

আহলেসুন্নাতের   মতে, নবীগণ  জন্ম হতে  মৃত্যু   পর্যন্ত মনগড়া কথা,     মিথ্যা  কথা ও মিথ্যা  অপবাদ   দেয়া   -  ইত্যাদি দোষ    -     ত্রুটি     থেকে  সম্পূর্ণ   মুক্ত। ইচ্ছাকৃত       কিংবা অনিচ্ছাকৃত      কোন        পাপই    তাঁদেরকে স্পর্শ     করতে পারেনা। কেননা নবীগণের সমস্ত কাজই অনুসরন করা উম্মতের   উপর ফরয। যদি তাঁরা  মিথ্যা কথা    বলতেন বা গুনাহ করতেন - তাহলে এটাও উম্মতের উপর ফরয হয়ে যেতো।

৪।ইমামিয়া    শিয়াদের     মতে:    নবীগণ  নবুয়্যতের দায়িত্ব লাভের সময়  - এমনকি  আল্লাহর সাথে  কালাম   করার সময়ও       ঈমান         এবং  আকায়িদের   মৌল  নীতিমালা সম্পর্কে অবগত থাকেন না। সুস্পষ্ট ধারণা দেয়ার পরই তাঁরা ঈমান ও    আকায়িদের  মৌলিক ধারণা লাভ করে থাকেন (নাউযুবিল্লাহ)।

সুন্নীমুসলমানদের ঐক্যমতে - নবীগণ জন্ম সূত্রেই ঈমানের জরুরী   বিষয়   সমূহ   অবগত  হয়ে   জন্ম    গ্রহণ করেন। কেননা আকায়িদ ও ঈমান সম্পর্কে অজ্ঞতার অর্থ হলো -  কুফর। আর কুফরী  অবস্থায় নবুয়তের দায়িত্ব   অর্পন করা অবৈধ।  শরীয়তের  খুঁটি  -     নাটি বিস্তারিত     বিষয় নবুয়ত লাভের    পরেই    ওহীর  মাধ্যমে        অর্জিত     হয়ে থাকে। মোদ্দা কথা - ঈমানী বিষয়ে সকল নবগণই জন্ম সুত্রে  অবগত      এবং  বিধি বিধানের   বিস্তারিত তফসীল তাঁরা ওহীর মাধ্যমে অবগত হন।

কুরআনেরআয়াত    ”মা -      কুনতা তাদরী  মাল  কিতাবু      ওয়ালাল ঈমান” - (অর্থ - হে নবী, আপনি কিতাব  ও  শরীয়তের তফসীলী বর্ণনা সম্পর্কে পূর্বে  অবগত ছিলেননা) - এর সারমর্ম         ইহাই। শিয়াদের   অনুরূপ    আক্বীদা    পোষণ করেন    জামাতে     ইসলামীর কোন  এক   নেতা।     তিনি ”ইসলামে নবীর   মর্যাদা” প্রবন্ধে  সিরাতুন্নাবী    সংকলন পুস্তকে লিখেছেন:            ”নবিগণ     নবুয়ত    লাভের      পূর্বে জানতেন   না   যে,             তিনি একজন    ভবিষ্যত         নবী” (নাউযুবিল্লাহ)। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: আমি মায়ের গর্ভে থাকতেই লওহে মাহফুজে কলমের    লেখনীর  আওয়াজ  শুনতাম।  আমি শিশুকালে  চাঁদের     সাথে  কথা  বলতাম  -            ইত্যাদি। দেওবন্দী আলিমগণও শিয়াদের অনুরূপ ধারণা পোষণ করে থাকেন।

৫।ইমামিয়া শিয়াদের মতে: কোন কোন নবী থেকে গুনাহ প্রকাশ     পেয়েছে।      যেমন,       হযরত         আদম,  হযরত ইব্রাহীম,  হযরত  ইউনুছ       ও হযরত মুছা  আলাইহিমুস সালাম প্রমূখ গুনাহ  করেছিলেন  (নাউযুবিল্লাহ)।  একই আক্বীদা পোষণ করেন    মাওলানা       মওদুদী     ও      তার অনুসারী  জামাতে     ইসলামী।  (”তাফহীমুল কোরআন” দেখুন)।

আহলেসুন্নাত ওয়াল জামায়াত -  এর  আক্বীদা হচ্ছে -  নবীগণ নবুয়তের পূর্বে ও   পরে  ছোট  বড় সব   ধরনের      গুনাহ হতে নিস্পাপ - মাসুম। হযরত আদম, হযরত ইব্রাহীম, হযরত  ইউনুছ ও হযরত  মুছা  আলাইহিমুস     সালামের যেসব কার্যাবলীকে  শিয়া, মুতাজেলা ও মউদুদীবাদীরা গুনাহ বলে মনে  করে  - ঐগুলো  খেলাফে     আওলা   বা অনুত্তম পর্যায়ভূক্ত -     কিন্তু বৈধ।  শিয়াদের        প্রভাবের কারণে যারা    বলে -   ”কোন নবীই   অনিচ্ছাকৃত       ত্রুটি থেকে একেবারে মুক্ত ছিলেন না” (নাউযুবিল্লাহ) - তারা এক্ষেত্রে   শিয়া   ও    মউদুদীর          অনুসারী।    (দেখুন       - প্রেমাঞ্জলী)

৬।শিয়াদের নেতা ইবনে বাবুওয়াই  স্বীয় ”উয়ুনু আখবারে রেযা” গ্রন্থে ইমাম রেযা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু - এর বরাতে লিখেন:            যখন    আল্লাহ        তায়ালা ফেরেস্তাদের দিয়ে আদমকে  সিজদা করালেন   এবং  বেহেস্তে  স্থান       দিয়ে তাঁকে   সম্মানিত     করলেন       -      তখন হযরত         আদম আলাইহিস   সালাম         মনে      মনে     ভাবলেন    - আমিই আল্লাহর     নিকট     সবচেয়ে  সম্মানিত  ব্যক্তি।      তাঁর  এ অবস্থা  বুঝে  আল্লাহ তায়ালা  আরশের  দিকে  তাকাবার জন্য    আদমকে               নির্দেশ    দিলেন।     হযরত     আদম আলাইহিস   সালাম   মাথা  তুলে  আরশের  পায়ায় লেখা দেখলেন - ”আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই ; মোহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া  সাল্লাম তাঁর রাসুল     ;   হযরত আলী   আল্লাহর   ওলী  ও     মুসলমানদের   নেতা,        বিবি ফাতেমা  বিশ্ব        নারীদের   নেত্রী;    ইমাম      হাসান  এবং হোসাইন     বেহেস্তী       যুবকদের  সর্দার”।    তখন   আদম আলাইহিস    সালাম    জিজ্ঞাসা   করলেন    -  এরা কারা? আল্লাহ বললেন -  তোমারই  সন্তান এবং   তার বংশধর  !

পঞ্চম পর্ব
=======
ইসলামের  তিন  খলিফা ও হযরত  আয়েশা  রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা   এর     বিরুদ্ধে  শিয়াদের অবমাননাকর  উক্তি:     

১।হযরত  আবু   বকর           রাদ্বিয়াল্লাহু     আনহু  এর  বিরুদ্ধে শিয়াদের অপবাদ:

তোহফায়েইসনা আশারিয়া - কৃত  শাহ  আবদুল আজিজ দেহলভী রহমাতুল্লাহি  আলাইহি  নামক গ্রন্থে   হযরত  আবু   বকর সিদ্দীক  রাদ্বিয়াল্লাহু    আনহু এর        বিরুদ্ধে           শিয়াদের কতিপয় অবমাননাকর  উক্তি উদ্ধৃত করা  হয়েছে  - যার কিছু নমুনা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

(ক)    ”হযরত আবু  বকর   রাদ্বিয়াল্লাহু    আনহু     একদিন মসজিদে নববীর  মিম্বারে   দাঁড়িয়ে  খুতবা দিতে  উঠলে হযরত     ইমাম হাসান ও হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা দুই  ভাই এসে    তাঁকে রাসুলুল্লাহর    মিম্বার থেকে নেমে যেতে বলেছিলেন।     কাজেই                হযরত       আবু    বকর রাদ্বিয়াল্লাহু          আনহু       খলিফা     হওয়ার   যোগ্য      নন”।

তাদেরএই  মনগড়া উক্তির জন্য এতটুকু বলাই যথেষ্ট  যে, সে সময় ইমাম হাসান ও হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ৮-৯ বৎসরের বালক ছিলেন। তাদের কথা হাস্যকর।

(খ)     ”নবী      করিম      সাল্লাল্লাহু   আলাইহি   ওয়া  সাল্লাম হযরত  আবু বকর    রাদ্বিয়াল্লাহু   আনহু   কে   কোন  দ্বীনী গুরুত্বপূর্ণ কাজে নেতৃত্ব প্রদান করেন নি”।

তাদেরএই   উক্তি মিথ্যা।         কারণ,   নবী          করীম      সাল্লাল্লাহু আলাইহি     ওয়া            সাল্লাম     ওহুদ  যুদ্ধের          পর     আবু সুফিয়ানের      পশ্চাদধাবন   করার জন্য     হযরত          আবু বকরকে   নেতৃত্ব       প্রদান      করেছিলেন।   এছাড়াও  ৯ম হিজরীতে মুসলমানদের প্রথম হজ্বে   হযরত আবু  বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে আমিরুল হজ্ব নিযুক্ত করেছিলেন। হুযুরের ওফাতের ৫দিন পূর্বে   তাঁকেমসজিদে নববীতে হুযুরের  স্থলে  ইমামতি     করার অনুমতি   দিয়েছিলেন   - যার  পিছনে  সমস্ত    সাহাবা  ১৯   ওয়াক্ত   নামায আদায় করেছিলেন।

(গ)  ”হযরত  আবু  বকর রাদ্বিয়াল্লাহু          আনহু -  হযরত ওমর  রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কে পরবর্তী খলিফা   মনোনীত করে  যান - অথচ  নবী  করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি  ওয়া সালাম    হযরত   ওমরকে     একবার    যাকাত    আদায়ের দায়িত্ব দিয়ে পরে তা প্রত্যাহার করে নেন”।

এরঅর্থ    কি  চিরস্থায়ী    নিষেধাজ্ঞা?  অন্য  কোন যুক্তিসঙ্গত কারণেই হয়তো তিনি তা করেছিলেন।

(ঘ) ”নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে কোন    'উত্তরাধিকারী    বা খলিফা    নিযুক্ত করে যাননি'- অথচ, হযরত আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নিজে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু  কে  পরবর্তী খলিফা মনোনীত    করে যান।    এটা     সরাসরি         নবীজির    আদর্শের   খেলাফ”।

শিয়াদেরএই অভিযোগও মিথ্যা। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া   সাল্লাম   ইশারা   ও ইঙ্গিতের মাধ্যমে   হযরত আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কে খলিফা নিযুক্ত করেছিলেন। হুযুরের  ইশারাই খলিফা নিযুক্তির  জন্য স্পষ্ট  ঘোষণার সমতুল্য। তদুপরি - মুসলিম শরীফে উল্লেখ    আছে যে, ওহীর   মাধ্যমে  পূর্বেই   নবী  করিম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জানিয়ে দেয়া  হয়েছে যে,  মুসলমানগণ হযরত আবু বকরকেই খলিফা    নিযুক্ত করবে।  সুতরাং ঘোষণা  দেয়ার  প্রয়োজন   ছিলনা। তদুপরি  - শিয়াদের কথার  দ্বারাই  প্রমাণিত    হয় যে,  তাদের   ইমাম  হযরত আলীকেও     হুযুর সাল্লাল্লাহু      আলাইহি          ওয়া   সাল্লাম খলিফা নিযুক্ত করে যাননি। ' কোন খলিফা নিযুক্ত করে যাননি' - এই কথাই তার প্রমান।

(ঙ) ”হযরত   আবু           বকর  রাদ্বিয়াল্লাহু   আনহু  -    বিবি ফাতিমা  রাদ্বিয়াল্লাহু   আনহাকে    পৈত্রিক   সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছেন   একমাত্র          নিজের       বর্ণিত হাদীসের ভিত্তিতে।       হাদীসটি হলো: আমরা    নবী    সম্প্রদায়  যে সম্পত্তি রেখে যাই - তা   সদকা বা জনগণের  জন্য দান হিসেবে   গন্য  হবে।    পরিবারের     কেউ তা  পাবে  না”। অথচ কুরআনে                   উল্লেখ  আছে:      ”আল্লাহ    তায়ালা তোমাদের ত্যাজ্য সম্পত্তি  তোমাদের আওলাদের জন্য নিজে  বন্টন করে দিয়েছেন। পুত্র সন্তান কন্যা সন্তানের দ্বিগুন    পাবে”।   হযরত        আবু বকর   কুরআনের      উক্ত নির্দেশকে  অমান্য    করে   নিজের    শ্রুত  হাদীসের  দ্বারা বিবি   ফাতিমাকে রাসুলুল্লাহ   সাল্লাল্লাহু      আলাইহি ওয়া সাল্লাম         এর    সম্পত্তির  উত্তরাধিকার        থেকে    বঞ্চিত করেছেন।

শিয়াদেরএ  অভিযোগ   সম্পূর্ণ মিথ্যা।    কেননা, উক্ত হাদীসখানা হযরত  হোজাইফা    ইবনুল   ইয়ামন,         জুবাইর  ইবনুল আওয়াম, আবু দারদা,  আবু   হুরায়রা, আব্বাস, হযরত আলী,   হযরত ওসমান, আবদুর রহমান ইবনে আউফ, সা'আদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস - প্রমুখ সাহাবায়ে কেরাম থেকেও     বর্ণিত হয়েছে  -  শুধু একা   হযরত  আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু  আনহু  থেকে নয়।    দ্বিতীয়ত:   হযরত   আবু বকর   সিদ্দীক   রাদ্বিয়াল্লাহু  আনহু       নিজ        কন্যা    বিবি আয়েশাকেও        নবীজীর     সম্পত্তি    দেননি।              হযরত আব্বাসকেও দেননি। ফারায়েয  মতে তাঁরাও  সম্পত্তির মালিক হতে পারতেন।   আল্লাহর  এই        বানী   সাধারণ মুমীনদের   বেলায় প্রযোজ্য    - নবীজীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।   এ    জন্যই কুরআন           ”তোমাদের” বহুবচন  শব্দ ব্যবহার      করা  হয়েছে।          হযরত   ফাতিমা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা  নবীজীর  হাদীস সম্পর্কে   অবগত       ছিলেন না। যখন  জানতে পারলেন,   তখন    তিনিও  দাবী প্রত্যাহার করে নিলেন। সুতরাং শিয়াদের এই  অভিযোগ হিংসার উপর প্রতিষ্ঠিত  - সত্যের উপর নয়। তদুপরি  - হযরত আবু বকর      রাদ্বিয়াল্লাহু           আনহু          হযরত        ফাতিমা রাদ্বিয়াল্লাহু  আনহার জন্য  এর পরিবর্তে     বাইতুল  মাল থেকে ভাতা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন।

পড়তে থাকুন আর বাকী লেখাগুলোর অপেক্ষায় থাকুন  ।

লেখাগুলোর যথাযথ প্রচার ও প্রসারে বেশি বেশি শেয়ার করুন ।

Comments

Popular posts from this blog

ছবছে আওলা ও আ'লা হামারা নবী।

খাজা গরীবে নেওয়াজ এর জিবনী।

পিডিএফ বই ২৮ টি একত্রে।