শবে মিরাজ
ছাল্লো আলাল হাবিব-
(ছাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াছাল্লাম)
#মি'রাজ_বা_উর্ধ্বগমন
#প্রসঙ্গঃ সচক্ষে আল্লাহর দীদার লাভ ও নবীজির সূরতে হাক্কী-র আত্মপ্রকাশ
#নবী করিম (দঃ)-এর উর্দ্ধজগতের মো'জেযা সমূহের মধ্যে মি'রাজ গমন একটি বিস্ময়কর মো'জেযা। এজন্যই মি'রাজের আয়াতের শুরুতেই আল্লাহ্ পাক 'সোবহানাল্লাহ্' শব্দটি ব্যবহার করেছেন-যা কেবল আচ্শর্য্যজনক ঘটনার ক্ষেত্রেই ব্যাবহার হয়ে থাকে। সশরীরে মি'রাজ গমনের প্রমাণ স্বরুপ কোরআনের "বিআবদিহী" শব্দটি তাত্পর্য্যপূর্ণ। কেননা,"আবদুন" শব্দটি দ্ধরা রুহ ও দেহের সমষ্ঠিকে বুঝান হয়েছে। তদুপরি-বোরাক প্রেরণ ও বোরাক কতৃক নবী করিম (দঃ) বহন করে নিয়ে যাওয়ার মধ্যেও সশরীরে মি'রাজ গমনের প্রমাণ পাওয়া যায়। সর্বোপরি-স্বপ্নে বা রুহানীভাবে মি'রাজে গমনের দাবী করা হলে কোরাইশদের মধ্যে এত হৈ চৈ হতোনা। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের সকল ইমামগনই সশরীরে মি'রাজ গমনের কথা স্বীকার করেছেন।
#মি'রাজের ঘটনাটি নবীজির জিবনে গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে,এর সাথে গতির সম্পর্ক ও সময় ও স্হানের সঙ্কোচনের তত্ত্ব জড়িত রয়েছে। সূর্যের আলোর গতি সেকেন্ডে একলক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল। পৃথিবীতে সূর্যের আলো পৌঁছতে লাগে আট মিনিট বিশ সেকেন্ড।এ হিসাবে পৃতিবী হতে সূর্যের দূরত্ব -নয় কোটি তিরিশ লক্ষ মাইল।অথচ নবী করিম (দঃ) মূহূর্তের মধ্যে চন্দ্র,সূর্য,সিদরাতুল মোন্তহা"আরশ-কুরছি ভ্রমন করে লা-মকানে আল্লাহর দীদার লাভ করে নব্বই হাজার কালাম করে পুনরায় মক্কা শরীফে ফিরে আসেন।এসে দেখেন,বিছানা এখনও গরম রয়েছে।এর চেয়ে আশ্চর্য আর কি হতে পারে? নবী করিম (দঃ)-এর নূরের গতি কত ছিল-এ থেকেই অনুমান করা যায়। কেননা তিনি ছিলেন নূর।য়াওয়ার সময় বোরাক ছিল-কিন্তু ফেরার সময় বোরাক ছিলনা(রহুল বয়ান)।
#মি'রাজের মধ্যে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো-অন্যান্য নবীগনের সমস্ত মো'জেযা নবী করিম (দঃ)-এর মধ্যে একত্রিত হয়েছিল। হযরত মুছা (আঃ) তূর পর্বতে আল্লাহর সাথে কলাম করেছেন। হযরত ঈছা (আঃ) সশরীরে আকাশে অবস্হান করেছেন এবং হযরত ইদ্রিস (আঃ) সশরীরে বেহেস্তে অবস্হান করেছেন।
তাঁদের চেয়েও উন্নত মকামে ও উচ্চমর্যাদায় আল্লাহ পাক নবী করিম (দঃ) কে নিয়ে সবার উপরে তাঁকে মর্যাদা প্রদান করেছেন। মুছা (আঃ) নিজে গিয়েছিলেন তূর পর্বতে । কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী (দঃ) কে আল্লাহ্তায়ালা দাওয়াত করে বোরাকে চড়িয়ে ফেরেস্তাদের মিছিলসহকারে প্রথমে বায়তুর মোকাদ্দাছে নিয়েছিলেন। সেখানে সব নবীগনের সশরীরে উপস্হিত করে হুজুর করিম (দঃ)-এর মোক্তাদী বানিয়েছিলেন। সদিনই সমস্ত নবীগনের ইমাম হয়ে নবী করিম (দঃ) 'নবীগণেরও নবী'রূপে বাস্তবে প্রমানিত হয়েছিলেন। সমস্ত নবীগন অষ্ট অঙ্গ (দুই হাত, দুই পা, দুই হাঁটু, নাক ও কপাল) দিয়ে সশরীরে নামাজ আদায় করেছিলেন সেদিন। সমস্ত নবীগন যে সশরীরে জীবিত, তারই বাস্তব প্রমাণ মিলেছিল মি'রাজের রাত্রে। সমস্ত নবীগন আপন আপন রওযায় জীবিত আছেন (হাদিস)।
#মি'রাজের রাত্রে নবী করিম (দঃ) কে প্রথম সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছিলো জিব্রাঈল,মিকাঈল ও ইস্রাফিল ফেরেস্তাসহ তাঁদের অধীনে সত্তর হাজার ফেরেস্তা দ্বারা । দ্বিতীয় সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছিল বায়তুল মোকাদ্দছে নবীগণের (আঃ) দ্বারা।
তৃতীয় সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছিল আকাশের ফেরেস্তা,হুর ও নবীগনের দ্বারা এবং চতুর্থ সম্বর্ধনা দিয়েছিলেন স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা। সিদরাতুল মোন্তাহা এবং আরশ মোয়াল্লা অতিক্রম করার পর স্বয়ং আল্লাহ্ তায়ালা একশ বার সম্বর্ধনামূলক বাক্য (উদনো মিন্নি ইয়া মুহাম্মাদ) অথ্যাত্-'হে প্রিয় মুহাম্মদ !আপনি আমার অতি নিকটে আসুন'- একথা বলে নবী করিম (দঃ) কে সম্মানিত করেছিলেন। কোরআন মাজিদে (ছুম্মা দা-না পাতাদাল্লা) আয়তটি এদিকেই ইঙ্গিতবহ -বলে 'তাফসীরে মুগনী' ও 'মিরছাদুল ইবাদ' নামক গ্রন্হেদ্বয়ের বরাত দিয়ে 'রিয়াজুন্নেছেহীন' কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে।উক্ত কিতাবখানা বরাত দিয়ে 'রিয়াজুন্নাছেহীন' কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত কিতাবখানা সাত শস বত্সর পূর্বে ফারসি ভাষায় লিখিত। লেখকের নিকট কিতাবখানা সংরক্ষিত আছে।
#মি'রাজের ঘঠনা ঘটেছিল নবুয়্যত প্রকাশের ১১বত্সর ৫ মাস ১৫ দিনের মাথায়।অর্থ্যাত্ প্রকাশ্য নবুয়্যতের ২৩বত্সরের দায়িত্ব পালনের মাঝামাঝি সময়ে। সে সময় হুজুর (দঃ)-এর বয়স হয়েছিল ৫১বত্সর ৫ মাস ১৫ দিন। সন ছিল নবীয়তের দ্বাদশ সাল। তিনটি পর্যায়ে মি'রাজকে ভাগ করা হয়েছে ' মক্কা শরীফ থেকে বায়তুল মোকাদ্দাছ পর্যন্ত মি'রাজের অংশকে বলা হয় ইসরা বা রাত্রি ভ্রমন ।বায়তুল মোকাদ্দাছ থেকে সিদরাতুল মোন্তাহ পর্যন্ত অংশকে বলা হয় মি'রাজ। সিদরাতুল মোন্তাহা থেকে আরশ ও লা-মকান পর্যন্ত অংশকে বলা হয় ই'রাজ। কিন্তু সাধারনভাবে পূর্ণ ভ্রমণকেই এক নামে মি'রাজ বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। কোরআন,হাদীসে মোতাওয়াতির এবং খবরে ওয়াহেদ দ্বারা যথাক্রমে এই তিনটি স্তরের মি'রাজ প্রমানিত।
(তথ্যসূত্রঃ- নূর নবী-অধ্যক্ষ হাফেজ মুহাম্মদ এম এ জলিল পৃঃ- ৯১-৯৩)
#মিরাজের প্রথম স্তরঃ
বন্ধুরা এখান থেকে ইনশা আল্লাহ কাল পোষ্ঠ করব- সাথেই থাকুন। আমরা নিয়মীত মি'রাজ সম্পর্কে আলোচন করব ইনশা আল্লাহ।
#শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Comments
Post a Comment