নজদির ভ্রান্ত আকাঈদ।
★আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ্।
★ প্রজেক্ট- ইসলামের মূলধারা ও বাতিল ফিরকা★
★ পোস্ট নং--৪৩
★বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
♦ইবনে তাঈমিয়ার আক্বিদা-বিশ্বাস♦
♣ তাইমীয়া ৬৬১ হিজরীতে জন্ম গ্রহণ করেন। ভ্রান্ত আকীদার কারণে ৭০৫ হিজরীতে কারারুদ্ধ হন। অতঃপর তাওবা করলে ৭০৭ হিজরীতে কারামুক্ত হন। পুনরায় ভ্রান্ত আক্বীদা প্রচারে লিপ্ত হলে দ্বিতীয়বার গ্রেফতার হন । পুনরায় তাওবা করলে মুক্তি লাভ করেন। এবারও সে ভ্রান্ত আকীদা প্রচারে লিপ্ত হলে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং কারারুদ্ধ অবস্থায় ৭২৮ হিজরীতে মৃত্যু বরণ করেন। বিশ্ববরেণ্য আলেমগণ এ বিতর্কিত ব্যক্তির ভ্রান্ত মতবাদ খন্ডন করেন এবং তাকে ঘৃণা করতেন। অপরদিকে ওহাবী ও মওদুদী মতাবলম্বীগণ তাকে হিজরী সপ্তম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ও শাইখুল ইসলাম ইত্যাদি সম্মানসূচক উপাধিতে ভূষিত করে থাকেন। ইবনে তাইমিয়াই প্রথম ব্যক্তি যিনি “মদীনা শরীফ যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করাকে হারাম” ফতোয়া দেন। মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওহাব নজদী ইবনে তাইমিয়ার কিতাব দ্বারা বেশী প্রভাবিত হয়ে মুসলমানদের মধ্যে “ওহাবী ফিতনার জন্ম দেন।
• নিম্নে তার ভ্রান্ত আকীদা সংক্ষেপে পেশ করা হলো
১. আল্লাহ তা'আলা দেহ বিশিষ্ট । তিনি আরশের উপর উপবিষ্ট এবং তার পার্শ্বে কিছু জায়গা খালি রেখেছেন, যাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বসাবেন। (কাশফুযযুনুন, আততাওয়াস বিন্নবী, পৃষ্ঠা১১, নিবরাস,পাদটীকা পৃষ্ঠা ১১৬)। (আল ঈমান ওয়াল ইসলাম, পৃষ্ঠা ১৫০ আল বাসাঈর,ইস্তাম্বুল, তুর্কী)।
২. মদীনা শরীফ যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করা হারাম।
৩. মাসিক ঋতুস্রাব কালে তালাক দিলে তা পতিত হবে না।
৪. ইছাকৃত ভাবে ছেড়ে দেয়া নামাযের কাযা ওয়াজিব নয়।
৫. মাসিক ঋতুস্রাব অবস্থায় মহিলাদের বাইতুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ করা জায়েয।
৬. হুযুুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যান্য মানুষের মত একজন মানুষ। সুতরাং, তার উসিলা নিয়ে দোয়া করা নাজায়েজ।
৭. কোরআন শরীফ আল্লাহ তা'আলার সবার মধ্যে সৃষ্ট।
৮. খায়র বা ‘ভাল' সৃষ্টি করতে আল্লাহ বাধ্য।
৯. আম্বীয়া কেরাম নিষ্পাপ নয়।
১০. রাসুল সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট শাফায়াত' কামনা করা হারাম।
১১. তাওরিত-ইঞ্জিলের ভাষায় কোন প্রকার বিকৃতি ঘটেনি, বিকৃতি ঘটেছে-অর্থের। (আল ইমান ওয়াল ইসলাম, পৃষ্ঠা ১৪৯-১৫১ ও আল বাসাঈর,ইস্তাম্বুল তুর্কী)।
১২. হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর ইসলাম গ্রহণ শুদ্ধ হয়নি। কারণ, তিনি তখন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন।
১৩. হযরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর নিকট সম্পদের মোহ অধিক ছিল । (হাশিয়ায়ে নিবরাস, পৃষ্ঠা ১১৬)।
১৪. এক সাথে তিন তালাক দিলে একটিমাত্র তালাক পতিত হবে। এটাই ইজমা-এ উম্মতের পরিপন্থী।
এ ছাড়া তার আরো ভ্রান্ত আক্বীদা রয়েছে। শেখ নজদীর মৌলিক চার ভ্রান্ত আক্বীদার সবকটি ইবনে তাইমিয়ারই প্রবর্তিত। উল্লেখিত চৌদ্দটি ভ্রান্ত আকীদার সাথে ওহাবীদের বেশ মিল রয়েছে। আর মওদুদী মতাবলম্বীরা ইবনে তাইমিয়ার উল্লেখিত ৯ নং আক্বীদা সহ অনেক ক্ষেত্রে একমত। ফলে উভয়দল ইবনে তাইমীয়াকে বেশ মূল্যায়ন করে। বর্তমান সৌদী ওহাবীগণও ইবনে তাইমীয়াকে তাদের মহান ইমাম হিসেবে মূল্যায়ন করে। ইবনে তাইমীয়ার রচনাবলী প্রকাশের পেছনে সৌদী সরকার প্রচুর অর্থ ব্যয় করছে।
©সংকলন- ইসলামের মূলধারা ও বাতিল ফিরকা।
লেখকঃ- মাওলানা কাযী মঈন উদ্দিন আশরাফী।
★পোস্টটি শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ করার অনুরোধ রইল।
আমাদের সাথে থাকুন।
Comments
Post a Comment