চার তরিকা।

★আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ্।
★প্রজেক্ট- ইসলামের মূলধারা ও বাতিল ফিরকা★
★পোস্ট নং--২৫
★বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
                         ♦চার তরিকা♦

♣শরীয়ত হলো মূল আর তরীকা বা তরীকত হলো শরীয়তের সহায়ক ও আত্মিক উৎকর্ষ সাধনের উত্তম পন্থা। এ ক্ষেত্রে বিশ্বের ইমাম ও ওলামার নিকট গ্রহণযোগ্য মূল তরীকা হলো চারটি ।

(১) কাদেরীয়াঃ

পীরানে পীর দস্তগীর মাহবুবে সোবহানী, কুতবে রাব্বানী গাউসে আযম শেখ সৈয়দ আবদুল কাদের জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির নামের সাথে সম্পর্কিত।তিনিই এ তরীকার প্রধান ইমাম হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত।

(২) চিশতীয়াঃ

সুলতানুল হিন্দ, গরীব নেওয়ায, আতাউর রসুল খাজা মঈনউদ্দীন চিশতী হাসান সাঞ্জারী আজমিরী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এ তরীকার প্রধান ইমাম।

(৩) সোহরাওয়ার্দীয়াঃ

হযরত শেখ শেহাবুদ্দীন ওমর সোহরাওয়ার্দী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এ তরীকার প্রধান ইমাম।

(৪) নকশবন্দিয়াঃ

♣হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নকশবন্দ মুশকিল কোশা বোখারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এ তরীকার প্রধান ইমাম। এগুলোর অনেক
শাখা-প্রশাখা রয়েছে। মোজাদ্দেদীয়া তরীকা নকশবন্দিয়ারই অন্যতম শাখা।

♣এছাড়াও অনেক তরীকা রয়েছে। তন্মধ্যে যেগুলোর নীতিমালা কোরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও কেয়াসের আলোকে তরীকতের মহান ইমামদের আদর্শ ভিত্তিক, ঐ গুলো গ্রহণ ও অনুসরণ যোগ্য।আর যে গুলো এর পরিপন্থী সেগুলো অগ্রাহ্য ও বর্জনীয়।

♣চার তরীকা বা ঐগুলোর গ্রহণযোগ্য শাখা-প্রশাখার মূল উদ্দেশ্য হলো মুসলমানদের আত্মিক উৎকৰ্ষ সাধনের মাধ্যমে মহান আল্লাহ ও রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাল্লামের সান্নিধ্য ও সন্তুষ্টি অর্জন করা।বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইসলামের আলোকবর্তিকা মূলত: তরীকতের মহান ইমামগণ ও তাদের অনুসারী আউলিয়া কেরামের মাধ্যমেই প্রজ্জলিত হয়েছে।আউলিয়া কেরামের আদর্শ চরিত্র ও আধ্যাত্মিক প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে কাফির, মুশরিক, ইয়াহুদী, নাসারা ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকজন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। তাদের সংস্পর্শে এসে মুসলমানগণ থাটি ঈমানদার ও শরীয়তের অকৃত্রিম অনুসারীতে পরিণত হয়েছে।শরীয়ত বিরোধী কাজে লিপ্ত মানুষ আউলিয়া কেরামের নেক নজরে সচ্চরিত্রের অধিকারী হয়েছে। সুতরাং,যাঁদের সাহচার্য অবলম্বন করার পর মুসলমানদের আক্বীদা, আমল ও আখলাক আল্লাহ ও রাসুল সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত আদর্শ মোতাবেক গড়ে উঠবে না, নিঃসন্দেহে এ সাহচার্য হবে নিস্ফল। আউলিয়া কেরামের সংশ্ররে গিয়ে অগণিত পাপীষ্ঠ লোক পরিপূর্ণ ঈমানদার,খাটি মুসলমান এমনকি, বেলায়তপ্রাপ্ত হয়েছে। আউলিয়া কেরামের জীবনী গ্রন্থে এর হাজারো দৃষ্টান্ত বিদ্যমান।

♣চার তরীকা ও এগুলোর নীতিভিত্তিক শাখা-প্রশাখাসমূহ ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আতের’ উপরই পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত।চার মাযহাবের ন্যায় ঐক্ষেত্রেও কোন প্রকার জটিলতা নেই।এক তরীকার অনুসারীগণ অন্য তরীকার মহান ইমাম ও তাঁর অনুসারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এক্ষেত্রে কোন প্রকার দ্বন্দ্ব-কলহ থাকার অবকাশ নেই।কারণ, সকল তরীকা আত্নীদাগত দিক থেকে এক ও অভিন্ন। তরীকতের এমন অনেক সম্মানিত পীর মাশায়িখ রয়েছেন যাঁরা একজন একাধিক তরীকার ‘খেলাফতপ্রাপ্ত হয়ে মুসলমানদের মধ্যে যোগ্যতানুসারে তরীকতের দীক্ষা দান করে থাকেন। তরীকাসমূহের মধ্যে কোন প্রকার বৈপরিত্ব না থাকার এটাই উজ্জল প্রমাণ। সুতরাং,চার তরীকা ও এগুলোর শাখা-প্রশাখা ইসলামে দলাদলি নয়; বরং এ হলো বিভিন্ন পন্থায় অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনের উপায় মাত্র।পাক-ভারত উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারকদের শীর্ষস্থানীয় অলী গরীবে নেওয়ায হযরত খাজা মঈনউদ্দীন চিশতী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মাযার শরীফ যিয়ারতে চিশতীয়াসহ অপরাপর সকল তরীকার অনুসারীগণ অধীর আগ্রহ ও অকৃতিম শ্ৰদ্ধা সহকারে প্রতিনিয়ত আজমীর শরীফ গমন করছেন। অনুরূপভাবে অন্যান্য যে কোন তরীকার আউলিয়া কেরামদের মাযার শরীফ যিয়ারতে গমন করে থাকেন।এটা তরীকতসমূহের পারস্পরিক যোগসূত্র ও সম্প্রীতির অকাট্য প্রমাণ। অতএব, কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ও দ্বন্দ্ব-কলহকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাপার বলে ধরে নিতে হবে। কোন তরীকাতেই কোন ধরণের অপকর্মের প্রতি সমর্থন নেই।

©সংকলন- ইসলামের মূলধারা ও বাতিল ফিরকা।
লেখকঃ- মাওলানা কাযী মঈন উদ্দিন আশরাফী।
★পোস্টটি শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ করার অনুরোধ রইল।
আমাদের সাথে থাকুন-
facebook.com/meitobimarenabiho

Comments

Popular posts from this blog

ছবছে আওলা ও আ'লা হামারা নবী।

খাজা গরীবে নেওয়াজ এর জিবনী।

পিডিএফ বই ২৮ টি একত্রে।