ক্ষমা,মুক্তি,কল্যানের রজনী শবে বরাত।
"ক্ষমা, মুক্তি ও কল্যাণের রজনী শবে বরাত"
লিখেছে, মাওলানা হাফেয মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান
-----------------_--------
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সৃষ্টির এক অনুপম বৈশিষ্ট হল তিনি তাঁর সৃষ্টির কতেক বিষয়কে কতেকের উপর প্রাধান্য ও মাহাত্ম্য দান করেছেন । যেমন, মদীনা শরীফের মর্যাদা তাবৎ শহরের উপর, মক্কাভূমিকে অন্যান্য ভূমির উপর, জমজম কূপকে অপরাপর কূপের উপর, মি’রাজের সফরকে অন্যান্য সব সফরের উপর , একজন মু’মিনের মর্যাদা সকল মানুষের উপর, একজন ওলীর মর্যাদা সব মু’মিনের উপর, সকল সাহাবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম কে সকল ওলীর উপর, নবী-রাসূল আলাইহিমুস সালাম গণের মর্যাদা সাহাবাদের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের উপর এবং তাজেদারে কায়েনাত বেমেছাল নূর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মর্যাদা সকল নবী-রাসূল আলাইহিমুস সালাম গণের উপর নির্দিষ্ট করা আছে । এমনিভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কতেক দিনকে কতেকের উপর মহিমান্বিত করেছেন । জুম’আর দিনকে সকল দিনের উপর , রমজান মাসকে সকল মাসের উপর , দু’আ কবুলের সময়কে সকল সময়ের উপর , শবে ক্বদরকে সকল রাতের উপর আর শবে বরাতকে কতেক রাতের উপর ফজিলত ও গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে । হাদীসের বর্ণনাসমূহ দ্বারা এই মহিমান্বিত রাতের যে ফযিলত, অবস্থান ও নির্দিষ্টতার যে প্রমাণ মিলে তা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে মুসলমানগণ এই রাতকে আল্লাহর নৈকট্য ও ক্ষমা লাভের উদ্দেশ্যে যথাযথ মর্যাদার সাথে অতিবাহিত করে ।
শবে বরাতঃ
শাবান মাসের ১৫ তম রাতকে শবে বরাত বলা হয় । হাদিস শরীফের বর্ণনানুযায়ী এটি (لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ) লায়লাতুন নিসফি মিন শা’বান বা শাবানের মধ্য রজনী ।
আল্লামা জারুল্লাহ যামাখশারী বলেন-
وقيل: ليلة النصف من شعبان، ولها أربعة أسماء: الليلة المباركة، وليلة البراءة، وليلة الصكّ، وليلة الرحمة
অর্থাৎ অন্য মতে লায়লাতুম মুবারাকাহ হল ‘বান মাসের মধ্য রাত। এর চারটি নাম পাওয়া যায়, লায়লাতুল মুবারাকাহ (বরকতের রজনী), লায়লাতুল বারাআহ (ভাগ্য/কল্যাণের রজনী), লায়লাতুস সাক্ক (বন্টন/বাজেটের রজনী), লায়লাতুর রাহমাহ (অনুগ্রহের রজনী)। [১]
পবিত্র কুরআনের সুরা আদ দুখানে একে লায়লাতুম মুবারাকাহ বলা হয়েছে আর এর সমর্থনে প্রায় উল্লেখযোগ্য সকল তাফসীরের কিতাবে শবে বরাত তথা শা’বানের মধ্য রজনীর কথা উল্লেখ হয় । যেমন- তাফসীরে ইবনে কাসীর, তাফসীরে ত্ববারী জামেউল বয়ান, তাফসীরে কাশশাফ, তাফসীরে সা’লাবী, তাফসীরে সামআ’নী, তাফসীরে বগবী, তাফসীরে জালালাঈন, তাফসীরে বায়জাভী, তাফসীরে কবীর(মাফাতিহুল গাইব), তাফসীরে রুহুল মা’আনী, যাদুল মাইসির ফি ইলমিত তাফসীর, তাফসীরে ক্বুরতুবী, তাফসীরে দুররে মানসুর, তাফসীরে নাসাফী, তাফসীরে মাজহারী, তাফসীরে ফাতহুল কাদীর, তাফসীরে সা’বী, তাফসীরে জুমাল,তাফসীরে রুহুল বয়ান, তাফসীরে নিসাপুরী, তাফসীরে ইবনে রজব, তাফসীরে কিরমানী গারায়িবুত তাফসীর, সফওয়াতুত তাফাসীর, তাফসীর আল লুবাব, তাফসীরে মাদারিক, তাফসীরে মাওয়ার্দি, আবী সাউদ ইত্যাদি ।
হাদীস শরীফের আলোকে শবে বরাতঃ
সকল আলেম ও ফকীহগণ এই বিষয়ের উপর একমত যে, মুসলমানদের সামগ্রিক জীবনধারায় যেকোন মাসয়ালা কুরআন-সুন্নাহ অথবা কেবল কুরআন বা সুন্নাহ হতে প্রমাণিত হলে তাঁর উপর আমল করা ওয়াজিব । ঐ সকল হাদীস যা এই মহিমান্বিত রাতের ফজিলতের ব্যাপারকে স্পষ্ট করে তা অনেক সাহাবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম হতে বর্ণিত হয়, তন্মধ্যে হযরত আবু বকর সিদ্দীক, মাওলা আলী মুরতাযা, উম্মুল মু’নিনীন আয়িশা সিদ্দীকাহ, আমর ইবনুল আস, মুয়াজ বিন জাবাল, আবু হুরায়রা, আবু ছা’লাবা, আউফ বিন মালিক, আবু মুসা আশ’আরী, আব্দুল্লাহ ইবন উমর, কাছীর বিন মুররাহ, উসমান বিন আবীল আস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উল্লেখযোগ্য ।
শবে বরাত প্রসঙ্গে সাহাবা কেরাম কর্তৃক এত অধিক বর্ণনা এ রাতের মর্যাদাকে সমৃদ্ধ ও শক্তশালী করে তোলে ।এমনিভাবে সালফে সালেহীনগণ এবং শীর্ষস্থানীয় উলামায় কেরামগণের আমল ও ফতোয়া এই রাতে ইবাদতের উপরেই ছিল । তবে কতেক লোক এই রাতে ইবাদত, যিকির এবং ওয়াজ-নসিহত আয়োজনকে মুখের কথায় ‘বিদ’আত’ আখ্যায়িত করে এ রাতের ফজিলতকে অস্বীকার করে এবং তা ক্ষুন্ন করে; যা একেবারেই নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসের বর্ণনা ও আমলের পরিপন্থী । নিম্নে শবে বরাত সংক্রান্ত হাদীসসমূহ তুলে ধরা হল-
১. হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হুযুর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন –
إِذَا كَانَ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ يَنْزِلُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا فَيَغْفِرُ لِعِبَادِهِ إِلَّا مَا كَانَ مِنْ مُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ لِأَخِيهِ
অর্থাৎ হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন-রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন পনেরই শাবানের রাত তথা শাবানের মধ্য রজনী উপস্থিত হয়,তখন আল্লাহ তায়ালা প্রথম আসমানে তাঁর রহমতের দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন এবং সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন, একমাত্র মুশরিক ও অপর ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত । [২]
উল্লেখ্য এই হাদীসের সংকলক ইমাম আবু বকর আহমদ বিন আমর বাযযার রাহমাতুল্লাহি আলাইহ ওফাত লাভ করেন ২৯২ হিজরীতে, তাঁর কিতাবে বর্ণিত হাদীস থেকে প্রমাণ হয় যে, শবেবরাতের ফজিলত প্রদান প্রাথমিক যুগের মুহাদ্দিসীন কেরাম হতেই চলে আসছে । সুতরাং বর্তমান যুগে কোন অজ্ঞ ব্যক্তি শবে বরাত সম্পর্কে না জেনে এর ফজিলত অস্বীকার করার কারণ হতে পারে সে সালফে সালেহীনের আমল সম্পর্কে অবগত নয় ।
২. হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হুযুর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন –
إِذَا کَانَتْ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، فَقُومُوا لَيْلَهَا وَصُومُوا نَهَارَهَا فَإِنَّ اﷲَ يَنْزِلُ فِيهَا لِغُرُوبِ الشَّمْسِ إِلَی سَمَائِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ: الَا مِنْ مُسْتَغْفِرٍ لِي فَاغْفِرَ لَهُ؟ الَا مُسْتَرْزِقٌ فَارْزُقَهُ؟ الَا مُبْتَلًی فَاعَافِيَهُ؟ الَا کَذَا؟ الَا کَذَا؟ حَتَّی يَطْلُعَ الْفَجْرُ
অর্থাৎ যখন শাবানের পনেরতম রাত উপস্থিত হয়, তখন তোমরা রাত ইবাদতে অতিবাহিত কর তথা নামাজ পড় এবং আগত দিনটিতে রোজা রাখ।কেননা ঐ রাতের সূর্যাস্তের সময় হতেই আল্লাহ তা’আলা প্রথম আসমানে স্বীয় করুণার দৃষ্টি প্রদান করেন আর বান্দাদের উদ্দেশ্যে বলেন-ক্ষমা প্রার্থনাকারী কেও আছ ? আমি তাকে ক্ষমা করব, রিজিক আন্বেষণকারী কেও আছ ? আমি তাকে রিজিক দ্বারা ধন্য করব, আসুস্থ কেও আছ ? আমি তাকে সুস্থতা দান করব, এভাবে অন্যান্য বিষয়েও বলতে থাকেন আর তা ফজর পর্যন্ত চলতে থাকে। [৩]
এই হাদীস দ্বারা শবে বরাত ও অন্যান্য রাতের মধ্যকার পার্থক্য প্রতিয়মান হয় । অন্যান্য রাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কেবল রাতের শেষাংশে দুনিয়ার আসমানে রহমতের দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন কিন্তু শবে বরাতে সুর্যাস্তের পর হতেই করুণার এ ধারা আরম্ভ হয়ে যায় ।
৩. উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত –
فَقَدْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ لَيْلَةٍ، فَخَرَجْتُ أَطْلُبُهُ، فَإِذَا هُوَ بِالْبَقِيعِ رَافِعٌ رَأْسَهُ إِلَى السَّمَاءِ. فَقَالَ: يَا عَائِشَةُ أَكُنْتِ تَخَافِينَ أَنْ يَحِيفَ اللَّهُ عَلَيْكِ وَرَسُولُهُ؟ قَالَتْ، قَدْ قُلْتُ: وَمَا بِي ذَلِكَ، وَلَكِنِّي ظَنَنْتُ أَنَّكَ أَتَيْتَ بَعْضَ نِسَائِكَ، فَقَالَ: إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْزِلُ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَغْفِرُ لِأَكْثَرَ مِنْ عَدَدِ شَعَرِ غَنَمِ كَلْبٍ
অর্থাৎ একরাতে আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে ঘরে পাচ্ছিলাম না। অতঃপর আমি তাঁর খোঁজে বের হলাম।তখন দেখলাম তিনি জান্নাতুল বাক্বী কবরস্থানে আসমানের দিকে দু’হাত তুলে দু’আরত আছেন। আমাকে সেখানে দেখে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন-হে আয়েশা! তুমি কি এ ভয় করছ যে,আল্লাহ তাঁর রসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম তোমার প্রতি অবিচার করবে ? তিনি আরজ করলেন আপনি বলছেন, এমন কিছু আসলে আমার মনে নেই; বরং আমি ধারণা করেছি যে, আপনি আপনার কোন স্ত্রীর হুজরায় তাশরীফ নিয়েছেন।তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন-নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা শা’বানের পনেরতম রাতে প্রথম আসমানের দিকে কৃপাদৃষ্টি দান করেন ।অতঃপর বনী ক্বলব এর মেষগুলোর লোম এর সংখ্যার চেয়েও অধিক গুনাহগার বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। [৪]
এই হাদীস দ্বারা শবে বরাতের রাতে হুযুর করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক কবরস্থানে যাওয়ার আমল সাব্যস্ত হয় । দ্বিতীয়ত, আরবে তখন বনু কালবের নিকট অসংখ্য বকরী ছিল যার আকর্ষনীয় বৈশিষ্ট্য ছিল এদের লোম ছিল অধিক । সুতরাং এই হাদীস দ্বারা অসংখ্য গুনাহগার বান্দার মার্জনার ইঙ্গিত মিলে ।
৪. হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
يَطْلُعُ اللهُ عَلَى خَلْقِهِ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلَّا لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ
অর্থাৎ আল্লাহ রাব্বুলা আলামীন শাবানের পনেরতম রাতে স্বীয় সৃষ্টির প্রতি রহমতের দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং মুশরিক,হিংসুক ব্যতীরেকে সবাইকে ক্ষমা করে দেন । [৫]
৫. হযরত আবু মুসা আল আশ’আরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন-
إِنَّ اللَّهَ لَيَطَّلِعُ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلَّا لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ
অর্থাৎ নিশ্চই আল্লাহ তা’আলা শাবানের পনেরতম রাতে সৃষ্টির প্রতি কৃপা দৃষ্টি প্রদান করেন। ফলে সকলকে ক্ষমা করেন, একমাত্র মুশরিক এবং বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীরেকে । [৬]
৬. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর বিন আস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন –
يَطَّلِعُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلَى خَلْقِهِ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِعِبَادِهِ إِلَّا لِاثْنَيْنِ: مُشَاحِنٍ، وَقَاتِلِ نَفْسٍ
অর্থাৎআল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা শা’বানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে স্বীয় মাখলুকের প্রতি রহমতের দৃষ্টি প্রদান করেন। অতঃপর দু শ্রেণীর বান্দা ব্যতীত সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। তারা হল মুসলমান ভাইয়ের প্রতি হিংসা বিদ্বেষ পোষণকারী এবং অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যাকারী । [৭]
৭. হযরত আবু সা’অলাবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
إِذَا كَانَ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ اطَّلَعَ اللهُ إِلَى خَلْقِهِ فَيَغْفِرُ لِلْمُؤْمِنِ، وَيُمْلِي لِلْكَافِرِينَ، وَيَدَعُ أَهْلَ الْحِقْدِ بِحِقْدِهِمْ حَتَّى يَدَعُوهُ
অর্থাৎ যখন পনেরই শাবানের রাত হয়,আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং মুমিনদের ক্ষমা করে দেন ও কাফিরদের অবকাশ দেন তথা ঈমান আনার সুযোগ দেন। আর হিংসা বিদ্বেষ পোষণকারীদের আহ্বান করেন অবকাশ দেন (তাওবার জন্য) যতক্ষণ তাদের হিংসার কারণে তারা তাঁর নিকট তওবা না করে । [৮]
৮. হযরত কাসীর বিন মুররাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
أَنَّ اللَّهَ يَطَّلِعُ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ إِلَى الْعِبَادِ، فَيَغْفِرُ لِأَهْلِ الْأَرْضِ إِلَّا رَجُلًا مُشْرِكًا أَوْ مُشَاحِنًا
অর্থাৎ শাবানের মধ্য রাত্রিতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং মুশরিক ও কলহকারী ব্যতীত সকল ক্ষমাপ্রার্থী দুনিয়াবাসীদের ক্ষমা করে দেন। [৯]
উপরোক্ত হাদীস সমূহ হতে শবে বরাতের প্রমাণ ও ফজিলত জানা যায় । আর এও জানা যায় এ রাতে আল্লাহর পক্ষ হতে বান্দাহর জন্য ক্ষমার ঘোষণার কথা এবং এও জানা কারা তা হতে বঞ্চিত হবে । জ্ঞাতব্য, তাওবার দরজা বান্দাহর জন্য সবসময়ই খোলা তবে শবে বরাত এমনি এক রাত যে রাতে অনবরত রহমত বর্ষিত হবে অগণিত হারে গুনাহ মাফ করা হবে ।
সাহাবা, সালেহীন ও উলামা কেরামের মতঃ
হুযুর করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল এবং সাহাবা কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের বর্ণনা হতে শবে বরাতের মর্যাদা সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। শা’বান মাসে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অধিক আমল হতেও এই রাতের বিশেষত্ব পাওয়া যায় ।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত-
خَمْسُ لَيَالٍ لَا تُرَدُّ فِيهِنَّ الدُّعَاءَ: لَيْلَةُ الْجُمُعَةِ، وَأَوَّلُ لَيْلَةٍ مِنْ رَجَبٍ، وَلَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، وَلَيْلَتَيِ الْعِيدَيْنِ
অর্থাৎ তিনি বলেন এমন পাঁচটি রাত আছে যে রাতগুলোয় দু’আ ফেরত হয়না।ওইগুলো হল-জুম’আর রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, শা’বান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত এবং দুই ঈদের রাত অর্থাৎ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার রাত । [১০]
হযরত আতা বিন ইয়াসার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত-
تُنْسَخُ فِي النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ الْآجَالُ، حَتَّى إِنَّ الرَّجُلَ ليَخْرُجُ مُسَافِرًا، وَقَدْ نُسِخَ مِنَ الْأَحْيَاءِ إِلَى الْأَمْوَاتِ، وَيَتَزَوَّجُ وَقَدْ نُسِخَ مِنَ الْأَحْيَاءِ إِلَى الْأَمْوَاتِ
অর্থাৎ শা’বানের মধ্য রজনীতে (শবে বরাতে) মানুষের আয়ু নির্ধারণ করা হয়। ফলে দেখা যায়, কেউ সফরে বের হয়েছে অথচ তাঁর নাম মৃতদের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, আবার কেউ বিয়ে করেছে অথচ তাঁর নাম জীবিতদের খাতা থেকে মৃতদের খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে । [১১]
ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ বিন ইসহাক বিন আব্বাস আল ফাকিহী আল মাক্কী বলেন-
ذِكْرُ عَمَلِ أَهْلِ مَكَّةَ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ وَاجْتِهَادِهِمْ فِيهَا لِفَضْلِهَا وَأَهْلُ مَكَّةَ فِيمَا مَضَى إِلَى الْيَوْمِ إِذَا كَانَ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، خَرَجَ عَامَّةُ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ إِلَى الْمَسْجِدِ، فَصَلَّوْا، وَطَافُوا، وَأَحْيَوْا لَيْلَتَهُمْ حَتَّى الصَّبَاحَ بِالْقِرَاءَةِ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ، حَتَّى يَخْتِمُوا الْقُرْآنَ كُلَّهُ، وَيُصَلُّوا، وَمَنْ صَلَّى مِنْهُمْ تِلْكَ اللَّيْلَةَ مِائَةَ رَكْعَةٍ يَقْرَأُ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ بِالْحَمْدُ، وَقُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ عَشْرَ مَرَّاتٍ، وَأَخَذُوا مِنْ مَاءِ زَمْزَمَ تِلْكَ اللَّيْلَةَ، فَشَرِبُوهُ، وَاغْتَسَلُوا بِهِ، وَخَبَّؤُوهُ عِنْدَهُمْ لِلْمَرْضَى، يَبْتَغُونَ بِذَلِكَ الْبَرَكَةَ فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ، وَيُرْوَى فِيهِ أَحَادِيثُ كَثِيرَةٌ
অর্থাৎ তিনি ‘আখবারে মক্কা’ নামক কিতাবে শাবানের মধ্য রজনীর ফযিলতে মক্কাবাসীর আমলের বিবরণ অধ্যায়ে বলেনঃ মধ্য শাবানের রাতে মক্কার অধিবাসী সাধারণ নর-নারীগণ মসজিদে হারাম শরীফে গমণ করতেন, নামাজ পড়তেন, তাওয়াফ করতেন, ভোর পর্যন্ত অবস্থান করতেন এবং কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করতেন এমনকি কুরআন খতমও হয়ে যেত ।তাদের মধ্যে কেউ কেউ এ রাতে ১০০ রাকাত নামায পড়তেন । প্রত্যেক রাকাআতেই সুরা ফাতিহা এবং দশবার করে সুরা ইখলাস পাঠ করতেন । তাদের মধ্যে যারা রোগী থাকতেন তারা রোগ থেকে মুক্তি ও বরকত লাভের আশায় জমজমের পানি পান করতেন ও এর দ্বারা গোসল করতেন । [১২]
এ বর্ণনা থেকে শবে বরাতে মক্কাবাসীদের আমল সম্পর্কে জানা যায় এবং শবে বরাত যে প্রাথমিক যুগ থেকে পালনীয় একটি আমল তা জানা যায় ।
ইমাম শাফেয়ী বলেন-
بَلَغَنَا أَنَّهُ كَانَ يُقَالُ : إِنَّ الدُّعَاءَ يُسْتَجَابُ فِي خَمْسِ لَيَالٍ : فِي لَيْلَةِ الْجُمُعَةِ ، وَلَيْلَةِ الْأَضْحَى ، وَلَيْلَةِ الْفِطْرِ ، وَأَوَّلِ لَيْلَةِ مِنْ رَجَبٍ ، وَلَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ
অর্থাৎ আর আমাদের নিকট এরূপ বর্ণনা এসেছে যে, নিশ্চই পাঁচটি রাতে বান্দার দুআ’র জবাব দেয়া হয় অর্থাৎ দু’আ কবুল করা হয়, জুমার রাত, ঈদুল ফিতর ,ঈদুল আযহার রাত, রজবের প্রথম রাত এবং শাবানের মধ্য রাত (শবে বরাত) । [১৩]
ইবনে রজব হাম্বলী বলেন-
فينبغي للمؤمن أن يتفرغ في تلك الليلة لذكر الله تعالى ودعائه بغفران الذنوب وستر العيوب وتفريج الكروب وأن يقدم على ذلك التوبة فإن الله تعالى يتوب فيها على من يتوب
অর্থাৎ প্রত্যেক আমলদার মু’মিনের জন্য কর্তব্য হল, মধ্য শাবানের রাতে মহান আল্লাহর যিকর বা ইবাদত থেকে অবসর হয়ে দু’আয় আত্মনিয়োগ করা। নিজের সকল দোষ-ত্রুটি গোপন রখতে, বিপদ-আপদ হতে নিরাপদ থাকতে ও নিজের গুনাহ হতে নিষ্কৃতি লাভ করতে দু’আ করবে । তাওবাকে অগ্রাধিকার দাও নিশ্চই আল্লাহ তাওবা কবুলকারী ।
তিনি আরও বলেন-
وقد استحب الامام الأوزاعي امام اهل الشام من التابعين في احياء ليله النصف من شعبان ان يصلي الرجل فيها لخاصه نفسه
واما اهل الشام من التابعين كأمثال خالد بن معدان ومكحول ولقمان بن عامر وغيرهم فقد كانوا يلبسون فيها احسن الثياب ويتبخترون وكتحلون ويحيون ليلتهم في المسجد تلك
و وافقهم الأمام الجليل اسحاق بن راهويه ( وهو شيخ البخاري ) على ذلك كما وافقهم طائفه من عباد اهل البصره
অর্থাৎ ইমাম আওজায়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি একজন তাবেঈ । তিনি ছিলেন সিরিয়াবাসীর ইমাম । তিনি ও সিরিয়ার অন্যন্য তাবেঈগণ যেমন, খালিদ বিন মা’দান, মাকহুল, লুকমান ইবনে আমীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রমুখগণ মধ্য শা’বানের রাত উৎযাপন করতেন । তাছাড়া অন্যান্যরা সুন্দর ও মার্জিত পোষাক পরিধান করে গর্বভরে মসজিদে রাত্রি জাগরণ করতেন । এদের মধ্যে হাদীস শাস্ত্রের পন্ডিত ইমামুল জলীল ইসহাক ইবনে রাহওয়াই আছেন । আর তিনি হলেন, ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর ইলমে হাদীসের শিক্ষক । বসরার অধিবাসী একদল বান্দাও এর মধ্যে রয়েছেন ।
খলিফা উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমাতুল্লাহি আলাইহি বসরায় তার গভর্নরকে লিখেন-
عليك بأربع ليال من السنة فإن الله يفرغ فيهن الرحمة إفراغا أول ليلة من رجب وليلة النصف من شعبان وليلة الفطر وليلة الأضحى
অর্থাৎ বছরে চার রাতের ব্যাপারে তোমার সতর্ক থাকা প্রয়োজন, কেননা আল্লাহ্ তা’আলা ঐ রাতগুলোতে তাঁর রহমতের দরজা উন্মুক্ত করে দেন, তা হল, রজবের প্রথম রাত, শাবানের মধ্য রাত এবং ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার রাত । [১৪]
ইবনে তাইয়িমাহ তার স্বীয় ফতোয়া গ্রন্থে লিখেছেন-
إذَا صَلَّى الْإِنْسَانُ لَيْلَةَ النِّصْفِ وَحْدَهُ أَوْ فِي جَمَاعَةٍ خَاصَّةٍ كَمَا كَانَ يَفْعَلُ طَوَائِفُ مِنْ السَّلَفِ فَهُوَ أَحْسَنُ
অর্থাৎ যদি কোন ব্যক্তি একাকী অথবা নির্দিষ্ট জামাতের সাথে শা’বানের মধ্য রাতে ইবাদত করে যেমনটা সালফে সালেহীনগণ করতেন অবশ্যই তা অধিক উত্তম হবে ।
তিনি আরও বলেন-
وَأَمَّا لَيْلَةُ النِّصْفِ فَقَدْ رُوِيَ فِي فَضْلِهَا أَحَادِيثُ وَآثَارٌ وَنُقِلَ عَنْ طَائِفَةٍ مِنْ السَّلَفِ أَنَّهُمْ كَانُوا يُصَلُّونَ فِيهَا فَصَلَاةُ الرَّجُلِ فِيهَا وَحْدَهُ قَدْ تَقَدَّمَهُ فِيهِ سَلَفٌ وَلَهُ فِيهِ حُجَّةٌ فَلَا يُنْكَرُ مِثْلُ هَذَا
অর্থাৎ শাবানের মধ্য রাতের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদীস এসেছে,আছার তথা সাহাবায়ে কেরামের বর্ণনা,তাবে তাবেঈগন সালফে সালহীগনের বক্তব্য রয়েছে আর তারা এই রাতে ইবাদত করতেন। সালফে সালেহীনদের মধ্যে এ রাতে ইবাদতের ব্যাপারে আন্তরিকতা ও একাগ্রতা পাওয়া যায় এবং এ ব্যাপারে (শবে বরাত) কোন নিষেধাজ্ঞা পাওয়া যায় নি । [১৫]
আহলে হাদিসের প্রসিদ্ধ আলেম আল্লামা আব্দুর রহমান মুবারকপুরীর অভিমত –
اعْلَمْ أَنَّهُ قَدْ وَرَدَ فِي فَضِيلَةِ لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ عِدَّةُ أَحَادِيثَ مَجْمُوعُهَا يَدُلُّ عَلَى أَنَّ لَهَا أَصْلًا فَمِنْهَا حَدِيثُ الْبَابِ وَهُوَ مُنْقَطِعٌ وَمِنْهَا حَدِيثُ عَائِشَةَ،ومنها حديث معاذ،ومنها حديث عبد الله بن عمرو، ومنها حديث علي (رض). فَهَذِهِ الْأَحَادِيثُ بِمَجْمُوعِهَا حُجَّةٌ عَلَى مَنْ زَعَمَ أَنَّهُ لَمْ يَثْبُتْ فِي فَضِيلَةِ لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ شَيْءٌ.
অর্থাৎ জেনে রাখো, শবে বরাতের ফযীলত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদীস বর্ণিত হয়েছে। যার সমষ্টি প্রমাণ করে শরীয়তে শবে বরাতের ভিত্তি রয়েছে। এসব হাদীসের মধ্যে আলোচ্য হাদীসটি ছাড়াও রয়েছে হযরত আয়েশা ,হযরত মু‘আয ,আব্দুল্লাহ ইবনে আমর . এবং হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম থেকে বর্ণিত হাদীসসমূহ। এসব হাদীসের সমষ্টি ওদের বিরুদ্ধে অকাট্য দলীল হয়, যাদের ধারণা হচ্ছে শবে বরাতের ফযীলত সম্পর্কিত কোন হাদীস প্রমাণযোগ্য নয়। [১৬]
শবে বরাত সম্পর্কিত অসংখ্য বর্ণনা দ্বারা এই উদ্দেশ্য নয় যে, কোন মু’মিন বান্দা এই বর্ণনাসমূহ সম্পর্কে অবগত হয়ে এগুলোকে কেবল গল্প, ঘটনা বা নিছক বর্ণনা হিসেবে দেখে । বরং; এ দ্বারা উদ্দেশ্য হল বান্দা যেন এরূপ রুহানী, বরকতময় রাতসমূহে তাঁর রবের নিকটবর্তী হয়ে তাঁর করুনাধারায় সিক্ত হতে পারে । এই বরকতময় রাতসমূহে আল্লাহ পাক তাঁর রহমত ও ক্ষমার খাজাঞ্ছা নিয়ে স্বীয় গুনাহগার বান্দাকে ধন্য করেন । সুতরাং এই রাতে অধিক হারে নফল নামায, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির, দরূদ, মিলাদ ও অন্যান্য নফল আমল করা মুস্তাহাব । আর এসবই হাদীস ও সালফে সালেহীনের আমল হতে সাব্যস্ত এবং এর দ্বারা তাদেরই অনুসরন সাব্যস্ত হয় । আল্লাহ যেন আমাদের যথাযথ মর্যাদা সহকারে শবে বরাত আদায়ের তাওফিক দান করে । আমীন বিহুরমাতি সায়্যিদিল মুরসালীন ।
তথসূত্রঃ
১. তাফসীরে কাশশাফ,সুরা দুখান,৪:২৬৯, দারুল কিতাবিল আরাবী বৈরুত, তৃতীয় প্রকাশ ১৪০৭ হিঃ ।
২. মুসনাদে বাযযার ১:২০৬,২০৭/১৫৭,১৫৮, হাদীস নং-৮০ মাকতাবাতুল উলুম ওয়াল হুকম, মদীনা মুনাওয়ারাহ [প্রকাশঃ২০০৩,২০০৯ ] , দারে ক্বুতনী আন নুযুল-৭৫,৭৬, ইবনে খুযাইমাহ আত তাওহীদ-৪৮, আলী মুরুযী মুসনাদে আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ)-১০৪ ।
৩. সুনানে ইবনে মাজাহ ১:৪৪৪ [ بَابُ مَا جَاءَ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ] হাদীস নং-১৩৮৮, ফাকেহী আখবারে মক্কা-১৮৩৭,৩:৮৪, বায়হাক্বী ফাজায়িলুল আওকাত-২৪, শো’আবুল ঈমান-৩৫৪২ ।
৪. সুনানে ইবনে মাজাহ ১:৪৪৪ [ بَابُ مَا جَاءَ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ] হাদীস নং-১৩৮৯, সুনানে তিরমিযি ৩:১০৭ [ بَابُ مَا جَاءَ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ] হাদীস নং- ৭৩৯, মুসান্নাফে আবী শায়বাহ-২৯৮৫৮, মুসনাদে আহমদ-২৬০১৮,২৬০৬০, বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান-৩৫৪৩,৩৫৪৪,৩৫৪৫ ।
৫. সহীহ ইবনে হিব্বান ১২:৪৮১ হাদীস নং-৫৬৬৫, মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ বৈরুত [প্রকাশঃ১৯৯৩], তাবরানী মু’জামুল আউসাত হাদীস নং-৬৭৭৬,মু’জামুল কবীর হাদীস নং-২০:১০৮,২১৫, আলবানী সহীহ আত তারগীব ওয়াত তাহরিব-১০২৬,২৭৬৭ ।
৬. সুনানে ইবনে মাজাহ ১:৪৪৪ [ بَابُ مَا جَاءَ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ] হাদীস নং-১৩৯.০, ইবনে আসেম আস সুন্নাহ-৫১০, বায়হাক্বী ফাজায়িলুল আওকাত-২৯, দারে ক্বুতনী আন নুযুল-৯৪, কানযুল উম্মাল-৩৫১৭৫, আলবানী সহীহুল জামে-১৮১৯ ।
৭. মুসনাদে আহমদ ৬;১৯৭,১৯৮ হাদীস নং-৬৬৪২ আহমদ শাকির কর্তৃক তাহকীককৃত, দারুল হাদীস কায়রো মিশর [প্রকাশ;১৯৯৫], হায়ছামী মাজমাউজ যাওয়ায়িদ-১২৯৬১ ।
৮. বায়হাক্বী, শো’বুল ঈমান ৫:৩৫৯ সিয়াম অধ্যায় হাদীস নং-৩৫৩২ মাকতাবাতুর রুশদ রিয়াদ [প্রথম প্রকাশঃ২০০৩], তাবরানী আল মু’জামুল কবীর ২২:২২৩,২২৪,হাদীস নং-৫৯০,৫৯৩, হায়ছামী মাজমাউজ যাওয়ায়িদ-১২৯৬২, আলবানী সহীহ আত তারগীব ওয়াত তাহরিব-২৭৭১ ।
৯. [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক,কিতাবুস সাওম হাদীস-৭৯২৩ মাকতাবুল ইসলামী বৈরুত [প্রকাশঃ১৪০৩ হিঃ] মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ-২৯৮৫৯, আন নুযুল দারে ক্বুতনী-৮২,৮৩,৮৪, বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান হাদীস নং-৩৫৫০/৩৫৪৯ ।
১০. মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক,কিতাবুস সিয়াম হাদীস নং-৭৯২৭ মাকতাবুল ইসলামী বৈরুত [প্রকাশঃ১৪০৩ হিঃ], বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান-৩৪৪০,ফাজায়িলুল আওকাত-১৪৯ ।
১১. মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক,কিতাবুস সিয়াম হাদীস নং-৭৯২৫ মাকতাবুল ইসলামী বৈরুত [প্রকাশঃ১৪০৩ হিঃ] ।
১২. আখবারে মক্কা ফাকেহী ৩য় খন্ড ৬৪/৮৪ পৃঃ দারু খদ্বর বৈরুত [প্রকাশ ১৪১৪ হিঃ] ।
১৩. আল উম্ম, ১:২৩১/২:৪৮৫, ইবনে রজব লাতায়িফুল মা’আরিফ ১:১৩৭, বায়হাক্বী আস সুনানুল কুবরা, বাবু ইবাদাতি লায়লাতিল ঈদাইন,হাদীস-৬১৫৯ ।
১৪. ইবনে রজব লাতায়িফুল মা’আরিফ ১৩৭, ১৩৮ পৃঃ দারু ইবনে হাযম [প্রথম প্রকাশঃ২০০৪] ।
১৫. মাজমাউ’ল ফতওয়া ফতোয়ায়ে তাইয়িমাহ,২৩তম খণ্ড,১৩২ পৃষ্ঠা ।
১৬. তুহফাতুল আহওয়াযী:৩/৪৪২, ৩/৩৬৫ (بَاب مَا جَاءَ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ) ।
Comments
Post a Comment