ইমাম শেরে বাংলা রহঃ জিবনী।

"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"

পুরো লিখাটা পড়ুন।

#সামাজিক_ও_রাজনৈতিক_জীবন

Islam is a complete code of life. ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনে ব্যবস্হার নাম।
শুধুমাত্র মসজিদ ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবব্ধ রাখার জন্য ইসলামের আবির্ভাব নহে ।
জীবনের প্রতিটি স্তরে ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণ -এটাই হচ্ছে একজন খাঁটি মুসলমানের দর্শন।
সামাজিক ও রাষ্ট্রিয়ভাবে ইসলামের প্রতিফলন-এটাই ইসলামের শিক্ষা।
মোজাদ্দেদে মিল্লাত হযরতুল আল্লামা গাজী সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা (রহঃ) ছিলেন এরূপ সার্বজনীন আদর্শের বাস্তব মডেল।
তাঁর চরিত্র ছিল 'উসওয়ায়ে হাসানা'র মূর্ত প্রতীক।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুপম আদর্শের ভিত্তিতে সমাজ ও রাষ্ট্রের পরিপূর্ণ সংস্কার সাধন-এটাই ছিল তাঁর জীবনের মহান ব্রত ও স্বপ্ন ।
তাই সুন্নীয়তের মহান আদর্শ প্রচার ও প্রসারে তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন।
ঈমান ও ইসলাম রক্ষার তাগিদে বাতিলপন্হীদের সার্বিকভাবে বয়কট করে সমাজের সর্বস্তর থেকে তাদের উচ্ছেদ সাধন -এটাই ছিল তাঁর জিবনের সংগ্রাম।
তিনি বিশ্বাস করতেন সুন্নি মতাদর্শ ভিত্তিক ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্যেই মানব মুক্তি নিহিত।
সুন্নি জনতার বৃহত্তর ঐক্য ব্যতীত এই মহত্‍ কর্মসূচীর সার্বিক বাস্তবায়ন কোনদিন সম্ভব নহে।

তাই তিনি সুন্নী জনগোষ্ঠীকে ঈমান আক্বীদার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ করার জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন।
তিনি পরিপূর্ণরূপে চেয়েছিলেন সুন্নী মুসলমানদের একক ঐক্যব্ধ প্লাটফরম।
এক্ষেত্রে সুন্নী সংগঠনের সর্বাধিক প্রয়োজনীয়তা তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছিলেন।
সুন্নীদের জাতীয় নেতৃত্ব আসা উচিত্‍ -এ কথা তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন।
আজকের সুন্নী জনতার সকল মজবুত সংগঠন তাঁর চিন্তা চেতনারই বাস্তব ফসল।
বর্তমান সুন্নীয়তের আন্দোলনে যে সমস্ত সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে তার সত্যিকার রূপকার হচ্ছেন তিনি।
এক্ষেত্রে তাঁর মোবারক সামাজিক ও রাজনৈতিক সাংগঠনিক  জীবনের উপর কিছুটা আলোকপাত করার প্রয়াস পাচ্ছি।

#সাংগঠনিক দিক দিয়ে প্রথমে তিনি 'জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম' নামক একটি কলুষমুক্ত প্রতিষ্ঠানের সদস্য হিসাবে যাত্রা শুরু করেন।
পরবর্তীকালে তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের সভাপতির পদ অলংকৃত করেন।
তাছাড়া  তিনি সুন্নী জামাতকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য 'আঞ্জুমানে এশায়াতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত পূর্ব পাকিস্তান' নামক একটি সংগঠন করেছিলেন।

অতঃপর তিনি তত্‍কালীন পাকিস্তান মুসলিম লীগের আজীবন শুভাকাংখী হিসাবে কাজ করে দেশ ও কওমের খেদমত করেন।
তিনি তদানীন্তন বৃটিশ আমল  হপে পাক-ভালত বিভক্তির পর প্রথম পাক-ভারত মহাযুদ্ধের সময় পর্যন্ত  একাধারে সুদীর্ঘ সতের বছর নিজ এলাকা মেখল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও তত্‍কালীন ফুড কমিটির প্রেসিডেন্ট পদ অলংকৃত করেন।

ধর্ম ও দলমত নির্বিশেষে এক মহান সার্বজনীন অনুকরণীয় অনুপম আদর্শের তিনি সৃষ্টি করেন।
কারণ তিনি তো ছিলেন ন্যায় বিচার ও সাম্যের মূর্ত প্রতীক, দেশপ্রেমিক আশেকে রাসূল (দঃ)।
শত্রু-মিত্র সকলেই তাঁর যোগ্যতা ও সততাকে অকুণ্ঠাচিত্তে একবাক্যে স্বীকার করতেন।
ন্যায় বন্টন ও ন্যায় দাবীর প্রতি তিনি ছিলেন সদা সচেতন।
তাঁর যোগ্য নেতৃত্ব ও মহান চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ্যের কারণে সকল মহলের পরিপূর্ণ আস্হা ও সমর্থন তিনি লাভ করেছিলেন।
তাই দেখা যায়-মেখল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইলিকশানে  তিনি একাধারে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এরূপ মহত্‍ ও সর্বোত্তম আদর্শের উদাহরণ ইতিহাসট খুবই বিরল। এক্ষেত্রে তাঁর চির শত্রু ওহাবীরা পর্যন্ত তাঁকে অকুণ্ঠচিত্তে সমর্থন করত।

কারণ তাদের মন্তব্য ছিল, ওনাকে যদি ভোট দেয়া হয তাহলে ন্যায় বিচার পাওয়া যাবে।
এমনকি এ কথার সাক্ষ পাওয়া যায় যে, ইলিকশানের পূর্বে ওহাবীদের নেতা মুফতি ফয়জুল্লাহ তাদের লোকদেরকে বল্ল, "তোমরা শেরে বাংলাকে ভোট দেবে"। তারা প্রশ্ন করে, "আপনি তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করেন, কিন্তু এখন কেন তাঁকে ভোট দিতে বলছেন?" মুফতি ফয়জুল্লাহ উত্তরে বলে" "সেটা তো অন্য ব্যাপারের মামলা।কিন্তু এই মুহূর্তে তাঁর মত সুবিচারক ও ন্যায় বন্টনকারী বিশ্বস্ত কোন লোক তোমরা পাবে না"।

#উপরোক্ত আলোচনা থেকে এ কথা সুষ্পষ্টরূপে প্রতিয়মান হয যে, হযরতুল আল্লামা গাজী শেরে বাংলা (রহঃ) চেয়েছিলেন পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় সর্বক্ষেত্রেই সুন্নীয়াতের মহান আদর্শের সফল বাস্তবায়ন।
এই উদ্দেশ্যে সুন্নী জনতাকে একই প্লাটফরমে একতাবদ্ধ হয়ে সামাজিক ও রাষ্ট্রী নেতৃত্বে আসা অপরিহার্য।
হযরত শেরে বাংলা (রাহঃ) এর সামাজিক ও রাজনৈতিক অংগনে সফল দৃষ্টান্তমূলক পদচারণা আমাদেরকে সুন্নীয়াত প্রতিষ্ঠার বাস্তব শিক্ষা প্রদান করে।

(সুত্রঃ ইমাম শেরে বাংলা রহঃ এর জিবনী-৮৬-৮৭পৃঃ)|

#শেয়ার করতে ভুলবেন না।
মাঁইতো বিমারে নবীহোঁ

Comments

Popular posts from this blog

ছবছে আওলা ও আ'লা হামারা নবী।

খাজা গরীবে নেওয়াজ এর জিবনী।

পিডিএফ বই ২৮ টি একত্রে।