রিযিক বৃদ্ধির আমল।

আয় বাড়াতে যে আমলগুলো করবেন

আয় বৃদ্ধি, রিযিকের স্বচ্ছলতা বা সংকীর্ণতা এক রহস্যঘেরা বিষয়। অনেকেই মনে করেন, রিযিক হচ্ছে অর্থকড়ি ও বিপুল ধন-ঐশ্বর্য। কিন্তু, সঠিক হলো রিযিক একটি ব্যাপক পরিধিকে অন্তর্ভুক্ত করে। এর মাঝে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সুস্বাস্থ্য, বুদ্ধিমত্তা, সময় ও জীবনের বরকত, সন্তান-সন্ততি ও তাদের সুস্থতা এবং সার্বিক কল্যাণ-উন্নতি। আর এ সবকিছুর নিয়ন্ত্রণই কেবল আল্লাহর হাতে। মহান রাবুল আলামিন তার সমগ্র সৃষ্টিকূলকে রিযিক দান করেন, তাই তিনি তার মহান গুণবাচক একটি নামও ধারণ করেছেন আর-রাজ্জাক। আর তিনিই সমস্ত রিযিকের উৎস এবং একমাত্র রিযিকদাতা- এ বিশ্বাস আমাদের আকিদার অংশ। তবে এসব বান্দা লাভ করে তার জন্য বরাদ্দ উপায়-উপকরণগুলোর মাধ্যমে। তাই আমাদের কর্তব্য হলো হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এর জন্য র্নিধারিত উপায়-উপকরণ সংগ্রহে চেষ্টা করা। যেমন চাষাবাদ, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প-চারু, চাকরি-বাকরি বা অন্য কিছু। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

﴿ ﻫُﻮَ ﭐﻟَّﺬِﻱ ﺟَﻌَﻞَ ﻟَﻜُﻢُ ﭐﻟۡﺄَﺭۡﺽَ ﺫَﻟُﻮﻟٗﺎ ﻓَﭑﻣۡﺸُﻮﺍْ ﻓِﻲ ﻣَﻨَﺎﻛِﺒِﻬَﺎ ﻭَﻛُﻠُﻮﺍْ ﻣِﻦ ﺭِّﺯۡﻗِﻪِۦۖ ﻭَﺇِﻟَﻴۡﻪِ ﭐﻟﻨُّﺸُﻮﺭُ ١٥ ﴾

‘তিনিই তো তোমাদের জন্য যমীনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে প্রান্তরে বিচরণ কর এবং তাঁর রিযক থেকে তোমরা আহার কর। আর তাঁর নিকটই পুনরুত্থান।’ (সূরা আল-মুলক, আয়াত : ১৫)

আয়-রোজগার বৃদ্ধি পাক, জীবনে স্বচ্ছলতা আসুক, অন্তত প্রয়োজন পরিমাণ রিযিক আমার থাকুক- এ কামনা সবার। তবে ব্যক্তিভেদে সবার নিয়্যত এক নয়। বহু মানুষ- যারা দুনিয়ার ভোগ-বিলাসে মত্ত হওয়ার জন্য রিযিক কামনা করেন, এ লেখা তাদের জন্য নয়। এ লেখা তাদের জন্য যারা প্রশান্তচিত্তে এক আল্লাহতে সমর্পিত হয়ে থাকতে প্রয়োজন পরিমাণ হালাল রিযিক কামনা করেন।

রিযিকে স্বচ্ছলতা কামনার পেছনে একজন মুসলমানের যে নিয়ত থাকতে পারে— তার নিয়ত হতে পারে তার উপর তার পরিবারের আল্লাহ কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব ও অধিকারগুলো আদায় করা। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী এবং বিশ্বের অপরাপর মুসলমানদের ও বিশেষত আল্লাহর যমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের মেহনতে সাহায্য করা। বেশি বেশি দান-খয়রাত করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা এবং সর্বোপরি ইসলামী সমাজকে সর্বোচ্চে তুলে ধরা। আসলে একজন মুসলমানের সম্পদ উপার্জন ও রিযিক কামনার নেপথ্যে এমন নিয়্যতই থাকা উচিত এবং তার ব্যয়ও হওয়া উচিত এসব বৃহৎ স্বার্থেই।

কি কি আমল করলে আয় বাড়ে – আজ আমরা এর উপায়সমূহের মধ্যে কুরআন ও হাদীস থেকে ১৪টি আমলের কথা আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

প্রথম আমল : তাকওয়া ও তাওয়াক্কুল অবলম্বন করা

আল্লাহর ভয় তথা তাকওয়া অবলম্বন করা, তাঁর নির্দেশাবলি পালন ও নিষিদ্ধ বিষয়গুলো বর্জন করা। পাশাপাশি আল্লাহর ওপর অটল আস্থা রাখা, তাওয়াক্কুল করা এবং রিজিক তালাশে তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করা। কারণ, যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- ﻭَﻣَﻦ ﻳَﺘَّﻖِ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻳَﺠۡﻌَﻞ ﻟَّﻪُۥ ﻣَﺨۡﺮَﺟٗﺎ ٢ ﻭَﻳَﺮۡﺯُﻗۡﻪُ ﻣِﻦۡ ﺣَﻴۡﺚُ ﻟَﺎ ﻳَﺤۡﺘَﺴِﺐُۚ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﺘَﻮَﻛَّﻞۡ ﻋَﻠَﻰ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻬُﻮَ ﺣَﺴۡﺒُﻪُۥٓۚ ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﺑَٰﻠِﻎُ ﺃَﻣۡﺮِﻩِۦۚ ﻗَﺪۡ ﺟَﻌَﻞَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻜُﻞِّ ﺷَﻲۡﺀٖ ﻗَﺪۡﺭٗﺍ ‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরী করে দেন। এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিযক দিবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তাঁর উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেনই। নিশ্চয় আল্লাহ প্রত্যেক জিনিসের জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।’ (সূরা আত-তালাক, আয়াত : ২-৩)

অর্থাৎ যে আল্লাহকে ভয় করবে এবং আনুগত্য দেখাবে, আল্লাহ তার সকল সংকট দূর করে দেবেন এবং তার কল্পনাতীত স্থান থেকে রিজিকের সংস্থান করে দেবেন। আর যে কেউ তার উদ্দেশ্য হাসিলে একমাত্র আল্লাহর শরণাপন্ন হয় তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। বলাবাহুল্য এই তাকওয়ার পরিচয় মেলে হালাল উপার্জনে চেষ্টা এবং সন্দেহযুক্ত কামাই বর্জনের মধ্য দিয়ে।

দ্বিতীয় আমল : তাওবা ও ইস্তেগফার করা

অধিক পরিমাণে ইস্তেগফার এবং বেশি বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেও রিজিক বাড়ে। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অন্যতম নবী ও রাসূল নূহ আলাইহিস সালামের ঘটনা তুলে ধরে ইরশাদ করেন,

﴿ ﻓَﻘُﻠۡﺖُ ﭐﺳۡﺘَﻐۡﻔِﺮُﻭﺍْ ﺭَﺑَّﻜُﻢۡ ﺇِﻧَّﻪُۥ ﻛَﺎﻥَ ﻏَﻔَّﺎﺭٗﺍ ١٠ ﻳُﺮۡﺳِﻞِ ﭐﻟﺴَّﻤَﺂﺀَ ﻋَﻠَﻴۡﻜُﻢ ﻣِّﺪۡﺭَﺍﺭٗﺍ ١١ ﻭَﻳُﻤۡﺪِﺩۡﻛُﻢ ﺑِﺄَﻣۡﻮَٰﻝٖ ﻭَﺑَﻨِﻴﻦَ ﻭَﻳَﺠۡﻌَﻞ ﻟَّﻜُﻢۡ ﺟَﻨَّٰﺖٖ ﻭَﻳَﺠۡﻌَﻞ ﻟَّﻜُﻢۡ ﺃَﻧۡﻬَٰﺮٗﺍ ١٢ ﴾ ‏( ﻧﻮﺡ : ١٠، ١٢ )

‘আর বলেছি, ‘তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল’। (তাঁর কাছে ক্ষমা চাইলে) ‘তিনি তোমাদের উপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, ‘আর তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান- সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য বাগ-বাগিচা দেবেন আর দেবেন নদী-নালা’। (সূরা নূহ, আয়াত : ১০-১২)

হাদীসে বিষয়টি আরেকটু খোলাসা করে বলা হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« ﻣَﻦْ ﻟَﺰِﻡَ ﺍﻻِﺳْﺘِﻐْﻔَﺎﺭَ ﺟَﻌَﻞَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟَﻪُ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺿِﻴﻖٍ ﻣَﺨْﺮَﺟًﺎ ﻭَﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﻫَﻢٍّ ﻓَﺮَﺟًﺎ ﻭَﺭَﺯَﻗَﻪُ ﻣِﻦْ ﺣَﻴْﺚُ ﻻَ ﻳَﺤْﺘَﺴِﺐُ ».

‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করবে আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের সংস্থান করে দেবেন।’ (আবূ দাঊদ : ১৫২০; ইবন মাজা : ৩৮১৯; তাবরানী : ৬২৯১)(1)

অন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ﻣَﻦْ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﺍﻟِﺎﺳْﺘِﻐْﻔَﺎﺭَ ﺟَﻌَﻞَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟَﻪُ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﻫَﻢٍّ ﻓَﺮَﺟًﺎ ﻭَﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺿِﻴﻖٍ ﻣَﺨْﺮَﺟًﺎ ﻭَﺭَﺯَﻗَﻪُ ﻣِﻦْ ﺣَﻴْﺚُ ﻻَ ﻳَﺤْﺘَﺴِﺐُ ‘যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তেগফার করবে আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ (বাইহাকী : ৬৩৬; হাকেম, মুস্তাদরাক : ৭৬৭৭ সহীহ সূত্রে বর্ণিত।)

তৃতীয় আমল : আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা

আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং তাদের হক আদায়ের মাধ্যমেও রিজিক বাড়ে। যেমন : আনাস ইবন মালেক রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি ইরশাদ করেন, ﻣَﻦْ ﺳَﺮَّﻩُ ﺃَﻥْ ﻳُﺒْﺴَﻂَ ﻟَﻪُ ﻓِﻲ ﺭِﺯْﻗِﻪِ ﺃَﻭْ ﻳُﻨْﺴَﺄَ ﻟَﻪُ ﻓِﻲ ﺃَﺛَﺮِﻩِ ﻓَﻠْﻴَﺼِﻞْ ﺭَﺣِﻤَﻪُ ‘যে ব্যক্তি কামনা করে তার রিজিক প্রশস্ত করে দেওয়া হোক এবং তার আয়ু দীর্ঘ করা হোক সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।’ (বুখারী : ৫৯৮৫; মুসলিম : ৪৬৩৯)

চতৃর্থ আমল : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরূদ পড়া

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরূদ পাঠেও রিজিকে প্রশস্ততা আসে। যেমনটি অনুমিত হয় নিম্নোক্ত হাদীস থেকে। তোফায়েল ইবন উবাই ইবন কা‘ব রাদিআল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন,

ﻗُﻠْﺖُ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧِّﻰ ﺃُﻛْﺜِﺮُ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻓَﻜَﻢْ ﺃَﺟْﻌَﻞُ ﻟَﻚَ ﻣِﻦْ ﺻَﻼَﺗِﻰ ﻓَﻘَﺎﻝَ ‏« ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ‏» . ﻗَﺎﻝَ ﻗُﻠْﺖُ ﺍﻟﺮُّﺑُﻊَ . ﻗَﺎﻝَ ‏« ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ﻓَﺈِﻥْ ﺯِﺩْﺕَ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻚَ ‏» . ﻗُﻠْﺖُ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒَ . ﻗَﺎﻝَ ‏« ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ﻓَﺈِﻥْ ﺯِﺩْﺕَ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻚَ ‏» . ﻗَﺎﻝَ ﻗُﻠْﺖُ ﻓَﺎﻟﺜُّﻠُﺜَﻴْﻦِ . ﻗَﺎﻝَ ‏« ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ﻓَﺈِﻥْ ﺯِﺩْﺕَ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻚَ ‏» . ﻗُﻠْﺖُ ﺃَﺟْﻌَﻞُ ﻟَﻚَ ﺻَﻼَﺗِﻰ ﻛُﻠَّﻬَﺎ . ﻗَﺎﻝَ ‏« ﺇِﺫًﺍ ﺗُﻜْﻔَﻰ ﻫَﻤَّﻚَ ﻭَﻳُﻐْﻔَﺮُ ﻟَﻚَ ﺫَﻧْﺒُﻚَ ‏» . ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺑُﻮ ﻋِﻴﺴَﻰ ﻫَﺬَﺍ ﺣَﺪِﻳﺚٌ ﺣَﺴَﻦٌ .

আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমি আপনার প্রতি অধিকহারে দরূদ পড়তে চাই, অতএব আমার দু‘আর মধ্যে আপনার দরূদের জন্য কতটুকু অংশ রাখব? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। কা‘ব বলেন, আমি বললাম, এক চতুর্থাংশ। তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে যদি তুমি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, অর্ধেক? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। কা‘ব বলেন, আমি বললাম, তাহলে দুই তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, আমার দু‘আর পুরোটা জুড়েই শুধু আপনার দরূদ রাখব। তিনি বললেন, তাহলে তা তোমার ঝামেলা ও প্রয়োজনের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার গুনাহ ক্ষমা করা হবে। (তিরমিযী : ২৬৪৫; হাকেম, মুস্তাদরাক : ৭৬৭৭ (আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি ‘হাসান’ সহীহ।)

পঞ্চম আমল : আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা

আল্লাহর রাস্তায় কেউ ব্যয় বা দান করলে তা বিফলে যায় না। সে সম্পদ ফুরায়ও না। বরং তা বাড়ে বৈ কি। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- ﻗُﻞۡ ﺇِﻥَّ ﺭَﺑِّﻲ ﻳَﺒۡﺴُﻂُ ﭐﻟﺮِّﺯۡﻕَ ﻟِﻤَﻦ ﻳَﺸَﺂﺀُ ﻣِﻦۡ ﻋِﺒَﺎﺩِﻩِۦ ﻭَﻳَﻘۡﺪِﺭُ ﻟَﻪُۥۚ ﻭَﻣَﺂ ﺃَﻧﻔَﻘۡﺘُﻢ ﻣِّﻦ ﺷَﻲۡﺀٖ ﻓَﻬُﻮَ ﻳُﺨۡﻠِﻔُﻪُۥۖ ﻭَﻫُﻮَ ﺧَﻴۡﺮُ ﭐﻟﺮَّٰﺯِﻗِﻴﻦَ ٣٩

‘বল, ‘নিশ্চয় আমার রব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযক প্রশস্ত করেন এবং সঙ্কুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনিই উত্তম রিযকদাতা।’ (সূরা আস-সাবা’, আয়াত : ৩৯)

ষষ্ঠ আমল : বারবার হজ-উমরা করা

হজ ও উমরা পাপ মোচনের পাশাপাশি হজকারী ও উমরাকারীর অভাব-অনটন দূর করে এবং তার সম্পদ বাড়িয়ে দেয়। আবদুল্লাহ ইব্ন মাসঊদ রাদিআল্লাহু আনহুমা কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

ﺗَﺎﺑِﻌُﻮﺍ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟْﺤَﺞِّ ﻭَﺍﻟْﻌُﻤْﺮَﺓِ ﻓَﺈِﻧَّﻬُﻤَﺎ ﻳَﻨْﻔِﻴَﺎﻥِ ﺍﻟْﻔَﻘْﺮَ ﻭَﺍﻟﺬُّﻧُﻮﺏَ ﻛَﻤَﺎ ﻳَﻨْﻔِﻰ ﺍﻟْﻜِﻴﺮُ ﺧَﺒَﺚَ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺪِ ﻭَﺍﻟﺬَّﻫَﺐِ ﻭَﺍﻟْﻔِﻀَّﺔِ ﻭَﻟَﻴْﺲَ ﻟِﻠْﺤَﺠَّﺔِ ﺍﻟْﻤَﺒْﺮُﻭﺭَﺓِ ﺛَﻮَﺍﺏٌ ﺇِﻻَّ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔُ

‘তোমরা হজ ও উমরা পরপর করতে থাক, কেননা তা অভাব ও গুনাহ দূর করে দেয়, যেমন দূর করে দেয় কামারের হাপর লোহা, সোনা ও রুপার ময়লাকে।’ (তিরমিযী : ৮১৫; নাসাঈ : ২৬৩১)

সপ্তম আমল : দুর্বলের প্রতি সদয় হওয়া বা সদাচার করা

মুস‘আব ইবন সা‘দ রাদিআল্লাহু আনহু যুদ্ধজয়ের পর মনে মনে কল্পনা করলেন, তিনি বোধ হয় তাঁর বীরত্ব ও শৌর্য-বীর্য হেতু অন্যদের চেয়ে নিজেকে বেশি মর্যাদাবান। সেই প্রেক্ষিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন- ﻫَﻞْ ﺗُﻨْﺼَﺮُﻭﻥَ ﻭَﺗُﺮْﺯَﻗُﻮﻥَ ﺇِﻻَّ ﺑِﻀُﻌَﻔَﺎﺋِﻜُﻢْ ‘তোমাদের মধ্যে থাকা দুর্বলদের কারণে কেবল তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক প্রদান করা হয়।’ (বুখারী : ২৮৯৬)

অষ্টম আমল : ইবাদতের জন্য ঝঞ্ঝাটমুক্ত হওয়া

আল্লাহর ইবাদতের জন্য ঝামেলামুক্ত হলে এর মাধ্যমেও অভাব দূর হয় এবং প্রাচুর্য লাভ হয়। যেমনটি বর্ণিত হয়েছে আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু কর্তৃক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﻳَﺎ ﺍﺑْﻦَ ﺁﺩَﻡَ ﺗَﻔَﺮَّﻍْ ﻟِﻌِﺒَﺎﺩَﺗِﻰ ﺃَﻣْﻸْ ﺻَﺪْﺭَﻙَ ﻏِﻨًﻰ ﻭَﺃَﺳُﺪَّ ﻓَﻘْﺮَﻙَ ﻭَﺇِﻻَّ ﺗَﻔْﻌَﻞْ ﻣَﻸْﺕُ ﻳَﺪَﻳْﻚَ ﺷُﻐْﻼً ﻭَﻟَﻢْ ﺃَﺳُﺪَّ ﻓَﻘْﺮَﻙَ ‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন, হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য তুমি ঝামেলামুক্ত হও, আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দারিদ্র ঘুচিয়ে দেব। আর যদি তা না কর, তবে তোমার হাত ব্যস্ততায় ভরে দেব এবং তোমার অভাব দূর করব না।’ (তিরমিযী : ২৬৫৪; মুসনাদ আহমদ : ৮৬৮১; ইবন মাজা : ৪১০৭)

নবম আমল : আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করা

আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে হিজরত তথা স্বদেশ ত্যাগ করলে এর মাধ্যমেও রিজিকে প্রশস্ততা ঘটে। যেমনটি অনুধাবিত হয় নিচের আয়াত থেকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

ﻭَﻣَﻦ ﻳُﻬَﺎﺟِﺮۡ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﻳَﺠِﺪۡ ﻓِﻲ ﭐﻟۡﺄَﺭۡﺽِ ﻣُﺮَٰﻏَﻤٗﺎ ﻛَﺜِﻴﺮٗﺍ ﻭَﺳَﻌَﺔٗۚ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﺨۡﺮُﺝۡ ﻣِﻦۢ ﺑَﻴۡﺘِﻪِۦ ﻣُﻬَﺎﺟِﺮًﺍ ﺇِﻟَﻰ ﭐﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟِﻪِۦ ﺛُﻢَّ ﻳُﺪۡﺭِﻛۡﻪُ ﭐﻟۡﻤَﻮۡﺕُ ﻓَﻘَﺪۡ ﻭَﻗَﻊَ ﺃَﺟۡﺮُﻩُۥ ﻋَﻠَﻰ ﭐﻟﻠَّﻪِۗ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭٗﺍ ﺭَّﺣِﻴﻤٗﺎ

‘আর যে আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করবে, সে যমীনে বহু আশ্রয়ের জায়গা ও সচ্ছলতা পাবে। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উদ্দেশ্যে মুহাজির হয়ে নিজ ঘর থেকে বের হয় তারপর তাকে মৃত্যু পেয়ে বসে, তাহলে তার প্রতিদান আল্লাহর উপর অবধারিত হয়। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত : ১০০)

আয়াতের ব্যাখ্যা আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস প্রমুখ সাহাবী রাদিআল্লাহু আনহুদ বলেন, স্বচ্ছলতা অর্থ রিজিকে প্রশস্ততা।

দশম আমল: আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা

সাধারণভাবে আল্লাহ যে রিজিক ও নিয়ামতরাজি দান করেছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া করা এবং তাঁর স্তুতি গাওয়া। কারণ, শুকরিয়ার ফলে নেয়ামত বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

﴿ ﻭَﺇِﺫۡ ﺗَﺄَﺫَّﻥَ ﺭَﺑُّﻜُﻢۡ ﻟَﺌِﻦ ﺷَﻜَﺮۡﺗُﻢۡ ﻟَﺄَﺯِﻳﺪَﻧَّﻜُﻢۡۖ ﻭَﻟَﺌِﻦ ﻛَﻔَﺮۡﺗُﻢۡ ﺇِﻥَّ ﻋَﺬَﺍﺑِﻲ ﻟَﺸَﺪِﻳﺪٞ ٧ ﴾

‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।’ (সূরা ইবরাহীম, আয়াত : ০৭)

আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা শুকরিয়ার বদৌলতে নেয়ামত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। আর বলাবাহুল্য আল্লাহর বাড়ানোর কোনো সীমা-পরিসীমা নাই।

দ্বাদশ আমল : বিয়ে করা

আজকাল মানুষের দুনিয়ার প্রাচুর্য ও বিলাসের প্রতি আসক্তি এত বেশি বেড়েছে, তারা প্রচুর অর্থ নেই এ যুক্তিতে প্রয়োজন সত্ত্বেও বিয়ে বিলম্বিত করার পক্ষে রায় দেন। তাদের কাছে আশ্চর্য লাগতে পারে এ কথা যে বিয়ের মাধ্যমেও মানুষের সংসারে প্রাচুর্য আসে। কারণ, সংসারে নতুন যে কেউ যুক্ত হয়, সে তো তার জন্য বরাদ্দ রিজিক নিয়েই আসে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

﴿ ﻭَﺃَﻧﻜِﺤُﻮﺍْ ﭐﻟۡﺄَﻳَٰﻤَﻰٰ ﻣِﻨﻜُﻢۡ ﻭَﭐﻟﺼَّٰﻠِﺤِﻴﻦَ ﻣِﻦۡ ﻋِﺒَﺎﺩِﻛُﻢۡ ﻭَﺇِﻣَﺂﺋِﻜُﻢۡۚ ﺇِﻥ ﻳَﻜُﻮﻧُﻮﺍْ ﻓُﻘَﺮَﺁﺀَ ﻳُﻐۡﻨِﻬِﻢُ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻣِﻦ ﻓَﻀۡﻠِﻪِۦۗ ﻭَﭐﻟﻠَّﻪُ ﻭَٰﺳِﻊٌ ﻋَﻠِﻴﻢٞ ٣٢ ﴾ ‏( ﺍﻟﻨﻮﺭ : ٣٢ )

‘আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস দাসীদের বিবাহ দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।’ (সূরা আন-নূর, আয়াত : ৩২)

উমর ইবন খাত্তাব রাদিআল্লাহু আনহুমা বলতেন, ওই ব্যক্তির ব্যাপার বিস্ময়কর যে বিয়ের মধ্যে প্রাচুর্য খোঁজে না। কারণ স্বয়ং আল্লাহ বলেছেন, ‘তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন।’

ত্রয়োদশ আমল : অভাবের সময় আল্লাহমুখী হওয়া এবং তার কাছে দু‘আ করা

রিজিক অর্জনে এবং অভাব দূরীকরণে প্রয়োজন আল্লাহর কাছে দু‘আ করা। কারণ, তিনি প্রার্থনা কবুল করেন। আর আল্লাহ তা‘আলাই রিজিকদাতা এবং তিনি অসীম ক্ষমতাবান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺭَﺑُّﻜُﻢُ ﭐﺩۡﻋُﻮﻧِﻲٓ ﺃَﺳۡﺘَﺠِﺐۡ ﻟَﻜُﻢۡۚ “আর তোমাদের রব বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব।” (সূরা আল-মু‘মিন, আয়াত : ৬০)

এ আয়াতে আল্লাহ দু‘আ করার নির্দেশ দিয়েছেন আর তিনি তা কবুলের জিম্মাদারি নিয়েছেন। যাবৎ না তা কবুলে পথে কোনো অন্তরায় না হয়। যেমন ওয়াজিব তরক করা, হারাম কাজে জড়ানো, হারাম আহার গ্রহণ বা হারাপ পরিচ্ছদ পরা ইত্যাদি এবং কবুলকে খানিক বিলম্বিতকরণ। আল্লাহর কাছে দু‘আয় বলা যেতে পারে-

‘হে রিজিকদাতা আমাকে রিজিক দান করুন, আপনি সর্বোত্তম রিজিকদাতা। হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে পবিত্র সুপ্রশস্ত রিজিক চাই। হে ওই সত্তা, দানের ঢল সত্ত্বেও যার ভাণ্ডারে কমতি হয় না। হে আল্লাহ, আমাকে আপনি আপনার হালাল দিয়ে আপনার হারাম থেকে যথেষ্ট করে দিন আর আপনার দয়া দিয়ে আপনি ছাড়া অন্যদের থেকে যথেষ্ট হয়ে যান। হে আল্লাহ আপনি আমাকে যে রিজিক দিয়েছেন তা দিয়েই সন্তুষ্ট বানিয়ে দিন। আর যা আমাকে দিয়েছেন তাতে বরকত দিন।’

অভাবকালে মানুষের কাছে হাত না পেতে আল্লাহর শরণাপন্ন হলে এবং তাঁর কাছেই প্রাচুর্য চাইলে অবশ্যই তার অভাব মোচন হবে এবং রিজিক বাড়ানো হবে। আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিআল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« ﻣَﻦْ ﻧَﺰَﻟَﺖْ ﺑِﻪِ ﻓَﺎﻗَﺔٌ ﻓَﺄَﻧْﺰَﻟَﻬَﺎ ﺑِﺎﻟﻨَّﺎﺱِ ﻟَﻢْ ﺗُﺴَﺪَّ ﻓَﺎﻗَﺘُﻪُ ﻭَﻣَﻦْ ﻧَﺰَﻟَﺖْ ﺑِﻪِ ﻓَﺎﻗَﺔٌ ﻓَﺄَﻧْﺰَﻟَﻬَﺎ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻴُﻮﺷِﻚُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟَﻪُ ﺑِﺮِﺯْﻕٍ ﻋَﺎﺟِﻞٍ ﺃَﻭْ ﺁﺟِﻞٍ ».

‘যে ব্যক্তি অভাবে পতিত হয়, অতপর তা সে মানুষের কাছে সোপর্দ করে (অভাব দূরিকরণে মানুষের ওপর নির্ভরশীল হয়), তার অভাব মোচন করা হয় না। পক্ষান্তরে যে অভাবে পতিত হয়ে এর প্রতিকারে আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল হয় তবে অনিতবিলম্বে আল্লাহ তাকে তরিৎ বা ধীর রিজিক দেবেন। (তিরমিযী : ২৮৯৬; মুসনাদ আহমদ : ৪২১৮)

চতুর্দশ আমল : গুনাহ ত্যাগ করা, আল্লাহর দীনের ওপর সদা অটল থাকা এবং নেকীর কাজ করে যাওয়া

গুনাহ ত্যাগ করা, আল্লাহর দীনের ওপর অটল থাকা এবং নেকীর কাজ করা- এসবের মাধ্যমেও রিজিকের রাস্তা প্রশস্ত হয় যেমন পূর্বোক্ত আয়াতগুলো থেকে অনুমান করা যায়।

তবে সর্বোপরি আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা দুনিয়াতে চিরদিন থাকার জন্য আসি নি। তাই দুনিয়াকে প্রাধান্য না দিয়ে উচিত হবে আখিরাতকে অগ্রাধিকার ও প্রাধান্য দেয়া। আমাদের এদেন অবস্থা দেখে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ ﺑَﻞۡ ﺗُﺆۡﺛِﺮُﻭﻥَ ﭐﻟۡﺤَﻴَﻮٰﺓَ ﭐﻟﺪُّﻧۡﻴَﺎ ١٦ ﻭَﭐﻟۡﺄٓﺧِﺮَﺓُ ﺧَﻴۡﺮٞ ﻭَﺃَﺑۡﻘَﻰٰٓ ١٧ ﴾ ‏( ﺍﻻﻋﻠﻰ : ١٦، ١٧ )

‘বরং তোমরা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিচ্ছ। অথচ আখিরাত সর্বোত্তম ও স্থায়ী।’ (সূরা আল-আ‘লা, আয়াত : ১৬-১৭

আর পরকালের মুক্তি ও চিরশান্তিই যার প্রধান লক্ষ্য তার উচিত হবে রিজিকের জন্য হাহাকার না করে অল্পে তুষ্ট হতে চেষ্টা করা। যেমন : হাদীসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন আ‘স রাদিআল্লাহু আনহুম থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« ﻗَﺪْ ﺃَﻓْﻠَﺢَ ﻣَﻦْ ﺃَﺳْﻠَﻢَ ﻭَﺭُﺯِﻕَ ﻛَﻔَﺎﻓًﺎ ﻭَﻗَﻨَّﻌَﻪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺑِﻤَﺎ ﺁﺗَﺎﻩُ ».

‘ওই ব্যক্তি প্রকৃত সফল যে ইসলাম গ্রহণ করেছে আর তাকে জীবন ধারণে (অভাবও নয়; বিলাসও নয়) পর্যাপ্ত পরিমাণ রিজিক দেয়া হয়েছে এবং আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তাতে তুষ্টও করেছেন। (মুসলিম : ২৪৭৩; তিরমিযী : ২৩৪৮; আহমদ : ৬৫৭২)

পরিশেষে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদের এসব উপায়-উপকরণ যোগাড় করে রিজিক তথা হালাল উপার্জনে উদ্যোগী ও সফল হবার তাওফীক দান করেন। তিনি যেন আপনাদের রিজিক ও উপার্জনে প্রশস্ততা দান করেন। আমীন।

তথ্যসূত্রঃ উদ্যোক্তা।

Comments

Popular posts from this blog

ছবছে আওলা ও আ'লা হামারা নবী।

খাজা গরীবে নেওয়াজ এর জিবনী।

পিডিএফ বই ২৮ টি একত্রে।