মিলাদ কিয়ামের মূল ভিত্তি।
**মিলাদ ও কিয়ামের বিধান-৮**
মিলাদ ও কিয়ামের মূল ভিত্তি এক নজরে
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে . মিলাদ
মাহফিলের অনুষ্ঠানের মূল
ভিত্তি হচ্ছে কোরআন ও হাদিস ।
সর্বপ্রথম আল্লাহ
তায়ালা রোজে আজলে আম্বিয়ায়ে কেরামের
সম্মেলন ডেকে নবী করিম (দঃ) -এর শান-
মান . তাঁর উপর ঈমান আনয়নের
প্রয়োজনীয়তা . দুনিয়াতে তাঁর
আগমনী বার্তা প্রচার করা -
ইত্যাদি বিষয়ে তাঁদের অঙ্গিকার নিয়েছিলেন
।এভাবে আল্লাহ তায়ালা নিজেই ঐ মাহফিল
পরিচালনা করেছিলেন । সূরা আলে-ইমরানের
৮১-৮২নং দীর্ঘ দুটি আয়াতে আল্লাহ পাক এ
মিলাদ অনুষ্টান করার ঘোষনা করেন ।
সুতরাং মিলাদ মাহফিলের অনুষ্ঠান
স্বয়ং আল্লাহর সুন্নাত । মাহফিলটি ছিল
নবী গনের । যা-তা মাহফিল নয় ।
সুতরাং কেয়ামসহ মিলাদ মাহফিল
করা নবীগনের সুন্নাত । এই মাহফিল ছিল
হুজুর আকরাম (দঃ) -এর আবির্ভাবের
কোটি কোটি বছর পূবেকার । সমস্ত
আমত্অম্বিয়ায়ে কেরাম দুনিয়াতে এসে তাদের
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রধান দায়িত্ব
হিসাবে হুজুর (দঃ) -এর সানা সিফাত কেয়াম
অবস্হায় বর্ণনা করেছেন এবং শেষে যুগে তাঁর
আবির্ভাবের আগাম শুভ সংবাদ
ঘোষনা করেছেন এবং শেষ যুগে তাঁর
আবির্ভাবের আগাম শুভ সংবাদ
ঘোষনা করেছেন । হযরত আদম (আঃ) নিজ
পুত্র শীস (আঃ) নসিহত ও অসিয়তের
মাধ্যমে নবীজির নূরের তাজিম
করতে বলেগেছেন । তখন ঐ
নূরে মোহাম্মদী (দঃ) ছিল হযরত শীসের
ললাটে । হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর পুত্র
ইসমাইল (আঃ)কে নিয়ে খানায়ে কাবার কাজ
শেষ করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নবী করিম (দঃ)-এর
মিলাদের জন্য খোদার কাছে মুনাজাত
করেছিলেন । রাসূলে পাকের শান-মান ও
নবীজির পদমর্যাদার উল্লেখ
করে তিনি আরবদেশে হযরত ইসমাইলের
(আঃ) বংশে নবীজিকে প্রেরনের জন্য
খোদার কাছে আরজি পেশ করেছিলেন ।
এটা হয়েছিল কেয়াম অবস্হায়
(সূত্রঃ ইবনে কাছির বেদায়া ও নেহায়া , ২য়
খনড ২৬১পৃষ্টা) । সুতরাং মিলাদ ও কিয়ামের
মূল প্রমান পাওয়া যায় কোরআন মাজিদের
সূরা বাক্বারার ১২৯নং আয়াতে । আর এই
মিলাদ ও কিয়ামের বয়স হলো নবীজির
জন্মের চার হাজার বছর পূর্বে ।
সুতরাং মিলাদ ও কিয়ামের প্রচলন নবীজির
পরে নয় .বরং জন্মের বহু বছর পূর্ব হতে ।
মিলাদ ও কিয়ামের জন্য নবীজির
উপস্হিতি কোন শর্ত নয় । মিলাদ ও কিয়াম
হচ্ছে আগমনী শুভ সংবাদে নবীজির
প্রতি তাজীম প্রদর্শন করা । হযরত
ইব্রাহিম (আঃ) -এর পর হযরত ইছা (আঃ)
নবী করিম (দঃ) -এর মিলাদ পাঠ করেছেন
বনী ইস্রাইলকে নিয়ে । তাদের
মাহফিলে ভাষনরত অবস্হায়
দাঁড়িয়ে তিনি ঘোষনা করেছিলেন- "আমি এমন
এক মহান রাসূলের আবির্ভাবের শুভ সংবাদ
তোমাদেরকে দিচ্ছি -যিনি আমার পরেই
আগমন করবেন এবং তাঁরসস পবিত্র নাম
হবে আহমদ (দঃ)"। সুরা আস-সাফ
৬নং আয়াতে এই মিলাদ মাহফিলের উল্লেখ
পাওয়া যায় । এ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল
জেরুযালেমে এবং নবীজীর জন্মের
৫৭০বত্সর পূর্বে । সুতরাং আমরা গভীর
পর্যালোচনায় দেখতে পেলাম-মিলাদ ও
কিয়াম যে কোন আকৃতি ও প্রকৃতিতেই
হোকনা কেন-তা হচ্ছে নবীগনের সুন্নাত ।
আকৃতি ও প্রকৃতি যুগে যুগে পরিবর্তন
পরিবর্ধন ও পরিমার্জিত হতে পারে-কিন্তু
মূলনীতির কোন পরিবর্তন হতে পারেনা ।
যেমন-জেহাদ ও রণকৌশল পরিবর্তন
হতে পারে এবং তার উপাদানও পরিবর্তন
হতে পারে । কিন্তু মূল জেহাদ ও যুদ্ধের
নীতিমালার কোন পরিবর্তন হতে পারেনা ।
সাহাবায়ে কেরামের সমাবেশে মিম্বারে দাঁড়িয়ে .
এমন কি যুদ্ধ ক্ষেত্রেও তিনি দন্ডয়মান
অবস্হায় তাঁর পবিত্র বেলাদতের দিন তারিখ
ও বংশ মর্যদা বয়ান করেছেন এবং নিজের
উপর নিজে দরূদ ও সালাম পাঠ করেছেন ।
যেমন আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া . শিফা শরীফ
ইত্যাদিতে বর্ণিত আছে - "হুজুরস(দঃ) ভাষন
দানরত অবস্হায় তাঁর নূরের
সৃষ্টি দুনিয়াতে নবীগনের মাধ্যমে তাঁর
আগমন . তাঁর বংশ মর্যদা এবং বংশ
তালিকে ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত
আলোচনা করেছেন এবং মসজিদে প্রবেশ
কালে প্রথমে নিজের উপর দরূদ শরীফ ও
তার পর মসজিদে প্রবেশের দোয়া পাঠ
করেছেন । (কিতাবুশ শিফা দরূদ অধ্যায়
দ্রষ্টব্য)
(সূত্রঃ মিলাদ ও কিয়ামের বিধান
-১৮-১৯পৃষ্টা ।
চলবে....
Comments
Post a Comment