ওহাবি আক্বিদা বনাম সুন্নি আক্বিদা।

★আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ্।
★ প্রজেক্ট- ইসলামের মূলধারা ও বাতিল ফিরকা★
★বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

♦নজদি ওহাবি আক্বিদা বনাম সুন্নি আক্বিদা♦

♣ ★নজদী ওহাবী আক্বীদা-০১
          ‎
আল্লামা আবু হামেদ ইবনে মারযুক বলেন, মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওহাব নজদীর মৌলিক ভ্রান্ত আক্বীদা চারটি। আল্লাহ তাআলাকে সৃষ্টির মত মনে করা। অর্থাৎ পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আল্লাহর হাত, চেহারা ইত্যাদির শাব্দিক অর্থ গ্রহণ করে আল্লাহ তা'আলাকে দেহ বিশিষ্ট মনে করা। (আততাওয়াসসুল বিন্নবী ওয়া জাহালাতুল ওয়াহাবীয়ীন, পৃষ্ঠা ১)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

সুন্নীদের মতে, আল্লাহ তা'আলার মত কোন বস্তু নেই। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা'আলার ক্ষেত্রে বর্ণিত- হাত ও চেহারা ইত্যাদি আয়াতে মোতাশাবাহ। এগুলোর উপর ঈমান রাখতে হবে এবং আল্লাহর জন্য শোভনীয় পন্থায় অর্থ গ্রহণ করতে হবে।

তাওহিদ দুই ভাগে বিভক্ত;
(১) তাওহিদে উলুহিয়াত,
(৪) তাওহিদে রাবুবীয়াত।

এ দু'তাওহিদ সমার্থক নয়। শেখ নজদীর মতে তাওহিদে রাবুবীয়াত দ্বারা মুসলমান হবে না। কাশফুশ শোবহাতে বলেন-

عرفت ان اقرارهم بتوحید الربوبتة لم یدخلهم فی الاسلام وان قصدهم الملائکة والانبیاء والاولیاء ویدعودن شفاعتهم والتقرب الی الله بذالک هو الذی احل دماء هم واموالهم

অর্থাৎ তুমি জানতে পেরেছ যে, এদের (মুসলমানদের) তাওহিদে রাববীয়াতকে অর্থাৎ এক আল্লাহ তা'আলাকে রব (প্রতিপালক) স্বীকার করা তাদেরকে ইসলামে প্রবেশ করাবে না। ফেরেস্তা,নবী ও অলীগণের শাফায়াত প্রার্থনা করা এবং তাদের সম্মানের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার (বিশ্বাস) ফলে তাদের জান-মাল লুট করা হালাল হয়ে গেছে। (তারীখে নজদ ও হেজাজ, পৃষ্ঠা ৩৮; আততাওয়াসসূল বিন্নবী ওয়া জাহালাতুল ওহাবীয়ীন, পৃষ্ঠা ১)।

প্রথমতঃ হুযুর করিম সাল্লাল্লাহ তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবা কেরাম, তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীনের সময় তাওহিদের এ প্রকারভেদ ছিল না। তাছাড়া হুযুর সাল্লাল্লাহ তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফিরদেরকে দু'ধরণের তাওহিদের কোন আহবান জানান নি।

দ্বিতীয়তঃ তাওহিদে উলুহিয়াত ও তাওহিদে রুবুবীয়াত উভয় এক ও অভিন্ন। সুন্নীদের আকীদা যিনি ইলাহ (ম বুদ), তিনিই রব (প্রতি পালক)। অনুরূপ যিনি রব, তিনিই ইলাহ । সুন্নীদের বিশ্বাস বিশুদ্ধ হাদিসের আলোকে কবরে জিজ্ঞেস করা হবে من ربك؟“তোমার রব কে?" উত্তরে  ربی الله “আল্লাহ আমার রব" বলতে হবে। এখানে উলুহিয়াতের পৃথক কোন প্রশ্ন হবে না। এতে প্রমাণিত হয় উভয় তাওহিদ এক ও অভিন্ন। এটাকে ভিন্নভাবে দেখা মুসলমানদেরকে কাফির বানানোর কুট-কৌশল মাত্র।
   
★নজদী ওহাবী আক্বীদা-০২

নবী করিম সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মান না করা। (তারীখে নজদ ও হেজাজ, পৃষ্ঠা ১৫৮; আততাওয়াসসুল বিন্নী ওয়া আইলাতুল ওয়াহাবীয়ীন পৃষ্ঠা ১ম)। এটি অত্যন্ত বাস্তব; কারণ, এ পর্যন্ত ওহাবীগণ এ সব বিষয়ে সর্বাধিক আপত্তি উত্থাপন করেছে, যেগুলো হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। শেখ নজদী এটাকে তাওহিদের
হেফাযত ও সংরক্ষণ বলে ব্যাখ্যা করতেন। আদদুরারুসসানীয়া় পৃষ্ঠা ৪১)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাামের প্রতি সর্বাধিক সম্মান প্রদর্শন ঈমানদারের উপর ফরয। পবিত্র কোরআনে পাকে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন-

و تعزروه و توقروه

অর্থাৎ হে ঈমানদারগণ! তোমরা নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অধিক সম্মান করো।

★নজদী ওহাবী আকীদা-০৩

তাকফীরুল মুসলেমীন অর্থাৎ মুসলমানদেরকে কাফির বানানো। (তারীখে নজদ হেজায পৃষ্ঠা ১৫৮; আততাওয়াসসসুল বিন্নবী ওয়া জাহালাতুল ওয়াহাবীয়ীন পৃষ্ঠা ২)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

অাল্লামা সৈয়দ আহমদ ইবনে যি'নী দাহলান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওহাব নজদী “দেরঈয়া" এর মসজিদে প্রত্যেক খোতবায় বলতেন, যে ব্যক্তি নবীর উসিলা গ্রহণ করবে, নিশ্চয়ই সে কাফির হয়ে যাবে। একদা তার ভাই শেখ সুলাইমান ইবনে আব্দুল ওহাব রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ইসলামের রুকন বা ভিত্তি কয়টি? শেখ নজদী বললেন, পাঁচটি। তখন শেখ সুলাইমান বললেন, আপনি ছয়টিতে পরিণত করেছেন। ষষ্ঠটি হলো-যে ব্যক্তি আপনার অনুসরণ করবে না সে মুসলমান নয়।
তখন তিনি কোন উত্তর দিতে পারলেন না। (আৰ্দদুরারুসসানীয়া, পৃষ্ঠা ৩৯)

এই চারটি অক্বীদার সবগুলোই শেখ নজদী ইবনে তাইমিয়ার কিতাব থেকে গ্রহণ করেছেন। (তারীখে নজদ ও হেজায, পৃষ্ঠা ১৫৮; আত তাওয়াসসুল বিন্নবী ওয়া জাহালাতুল ওয়াহাবীয়ীন, পৃষ্ঠা ২)।

কোন মুসলমানকে কোন গুনাহর কারণে, এমনকি তা যদি কবীরা গুনাহও হয় কাফির বলা যাবে না। যতক্ষণ কোন মুসলমানের মধ্যে কুকরী নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে কাফির বলা যাবে না। কোন মুসলমানকে কাফির বললে ফতোয়া দাতাই কাফির হয়ে যাবে। আর যখন কোন মুসলমানের কুফুরী নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হবে, তখন যে ব্যক্তি, তার কুফরী ও স্থায়ী আযাব প্রাপ্তির বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করবে, সেও কাফির হয়ে যাবে। কিতাবুশ শেফা,কৃতঃ আল্লামা কাজী আয়ায মালেকী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)।

★নজাদী ওহাবী আকীদা-০৪

শেখ নজদী হুযুর সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরুদ শরীফ পাঠ থেকে বিরত থেকে বলতেন দরুদ শরীফের ধ্বনিতে তিনি কষ্টবোধ করতেন। বিশেষতঃজুমার দিন দরূদ শরীফ পাঠ নিষেধ করতেন। মসজিদের মিনারায় উচ্চ স্বরে দরুদ শরীফ পাঠ নিষেধ করতেন। যে ব্যক্তি তার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দরুদ শরীফ পাঠ করত, তাকে কঠোর শাস্তি দিত। একজন পূণ্যবান সুন্দর কঠের অধিকারী অন্ধ মুয়াযযিন মিনারায় আযানের পর দরুদ শরীফ পাঠ করতেন। শেখ নজদী উক্ত মুয়াযযিনকে দরুদ শরীফ পাঠ নিষেধ করলে মুয়াযিন তার নির্দেশ অমান্য করে পুনরায় দরুদ শরীফ পাঠ করলে শেখ নজদী তাকে হত্যা করে। শেখ নজদী এ প্রসঙ্গে বলত, মসজিদের মিনারায় দরুদ শরীফ পাঠ গুনাহ, একজন পতিতার ঘরে বাদ্যবাজনার মতই। শেখ মজাদী-দালায়েলুল খায়রাত ও অন্যান্য দরুদ শরীফের অনেক কিতাব জ্বালিয়ে দিয়েছেন। (নাউযুবিল্লাহ)। আদদুৱারুসসানীয়া পৃষ্ঠা ৪১, আততাওয়াসসুল বিন্নবী  ওয়া জাহালাতুল ওয়াহাবিয়িন পৃষ্ঠা ২৪৪; ফিতনাতুল ওহাবীয়া পৃষ্ঠা ৭৭; তারীখে ওহাবীয়া, পৃষ্ঠা ৬৩; তারীখে নজদ ও হেজায পৃষ্ঠা ১৫৮)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

জীবনে একবার দরুদ শরীফ পাঠ করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয। হুযুর সাল্লাল্লাহ তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম মুবারক শ্ৰবণে প্রথমবার দরুদ শরীফ পাঠ করা ওয়াজিব। অতঃপর প্রত্যেকবার নাম মুবারক শ্রবণে দরুদ শরীফ পাঠ করা মুস্তাহাব। তাঁর মুবারক নাম শ্ৰবণে যে ব্যক্তি দরুদ শরীফ পাঠ করে না, পবিত্র হাদিসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বড়
কৃপণ বলেছেন। (মিশকাত শরীফ )। হাদিস শরীফে জুমার দিন অধিক পরিমান দরুদ শরীফ পাঠের নির্দেশ এসেছে। (মিশকাত শরীফ)। সুতরাং জুমার দিনের দরুদ শরীফ পাঠ অধিক সাওয়াবের কাজ। দরুদ শরীফ পাঠের বৈধ ক্ষেত্রে বাধা দান, শাস্তি দান, হত্যা,দরুদ শরীফের কিতাব জ্বালিয়ে দেয়া ও অবমাননাকর উক্তি, নিঃসন্দেহে পবিত্র কোরআনের বর্ণিত দরুদ শরীফ পাঠের আদেশ সূচক আয়াতের অস্বীকার ও মহানবী সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহান মর্যাদায় চরম অবমাননা, বিধায় এটা কুফরী। অধিক সংখ্যক দরুদ শরীফ পাঠকারী কেয়ামতের কঠিন দিবসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের সর্বাধিক নিকটে অবস্থান করবে । মিশকাত শরীফ)। দরূদ শরীফ পাঠের ফযিলত ও সাওয়াব সম্পর্কে অসংখ্য বিশুদ্ধ হাদিস বর্ণিত। তাই সুন্নী মুসলমানগণ অধিক সংখ্যায় দরুদ শরীফ পাঠ করে থাকেন।

★নজদী ওহাবী আক্বীদা-০৫

শেখ নজদী পবিত্র কোরআনের মনগড়া তাফসীর করতেন। অনুরূপভাবে তার অনুসারীদেরকেও এর অনুমতি দিতেন। আর যদি কোরআনের কোন আয়াত তাদের জানা না থাকত তবে নিজেদের মনগড়া তাফসীর মোতাবিক আমল করার নির্দেশ দিতেন। ফিকাহ, তাফসীর ও হাদিসের কিতাব সমূহ পাঠে তার অনুসারীদেরকে নিষেধ করতেন। এ ধরণের অনেক কিতাব শেখ নজদী জ্বালিয়ে দিয়েছেন। মনগড়া মতামতকে নির্ভরযোগ্য কিতাব ও বিজ্ঞ ওলামাদের মতামতের উপর প্রাধান্য দিতেন। চার মাযহাবের ইমামগণের মতামতকে ‘কিছুই নয়" বলে উড়িয়ে দিতেন। তিনি কখনো বলতেন, শরীয়ত এক, সুতরাং চার মাযহাব কিসের?  আবার কখনো নিজেকে হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী হিসেবে প্রকাশ করতেন। তার মূলনীতি ছিল “হক ওটা, যা তার মনপূতঃ যদিও শরীয়তের দলীল সমূহ ও ইজমা-এ-উম্মতের পরিপন্থী হয়। আর বাতিল ওটা, যা তার মনপূতঃ নয়৷" ( আদদুরারুসসানীয়া পৃষ্ঠা ৪১ ও ৪২: আততাওয়াসসুল বিন্নবী ওয়া জাহালাতুল ওয়াহাবীয়া পৃষ্ঠা ২৪৪ ও ২৪৫; তারীখে নজদ ও হেযাজ পৃষ্ঠা ১৫৯ তারীখে ওহাবীয়া পৃষ্ঠা ৬২)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত

পবিত্র কোরআনের মনগড়া ও ভিত্তিহীনভাবে তাফসীর করা হারাম ও নিষিদ্ধ। (এতকান ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১৭৩)।

হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি কোরআন শরীফের মনগড়া তাফসীর করল, সে তার স্থান জাহান্নামে করে নিল" (তিরমিযী শরীফ ২য় খন্ড,পৃষ্ঠা ১৯)

সাহাবা কেরাম মনগড়া তাফসীরের ক্ষেত্রে বেশ কঠোরতা অবলম্বন করেছেন। পবিত্র কোরআনের তাফসীর করতে হলে তার পনেরটি বিষয়ের জ্ঞান থাকতে হবে। অন্যথায় তাফসীর বা ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে ভুল হবার সম্ভাবনা থাকবে। অপর হাদিসে বর্ণিত, “কোন ব্যক্তি নিজস্ব ধ্যান-ধারণা মত তাফসীর করল, অতঃপর সেটা সঠিক প্রমাণিত হল। তারপরও সে নিঃসন্দেহে ভুল করল । (তিরমিযী শরীফ ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ১১১)। মনগড়া তাফসীর দ্বারা নিজেও গোমরাহ হবে এবং অপরকেও গোমরাহ করবে। তাফসীর বা ব্যাখ্যা হতে হবে বিশুদ্ধ হাদিস ও আরবী ব্যাকরণ, অলংকারশাস্ত্র ইত্যাদির বিধি নিয়মের আলোকে; অন্যথায় মনগড়া বলে বিবেচিত হবে। ইমাম মুজতাহিদগণের মতামতের তোয়াক্কা না
করাও গোমরাহির পরিচয় । চার মাযহাবের ইখতেপাফ বা মতানৈক্য মৌলিক নয়, বরং তাদের এ ইখতেলাফ উম্মতের জন্য রহমত ও কল্যাণ স্বরপ।

★নজদী ওহাবী আক্বীদা-০৬

নবী-ওলীদের উসিলা গ্রহণ শিরক । এমনকি নবীকুল শিরোমণি হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের উসিলা গ্রহণও শিরক। যারা উসিলা গ্রহণ করে তারা মুশরিক। ফিতনাতুল ওহাবীয়া " ৬৬; আততাওয়ানসসূল বিন্নবী ওয়া জাহালাতুল ওয়াহাবীয়ীন পৃষ্ঠা২৪৭)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

নবী-অলীগণের উসিলা জায়েয এর পক্ষে কোরআন-সুন্নাহর অসংখ্য দলীল বিদ্যমান। নবী করিম সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের উসিলা আল্লাহ তাআলার নিকট সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত-

یا ایها الذین امنوا اتقوا الله وابتغوا الیه الوسیلة

অর্থাৎ হে ঈমানদারগণ। আল্লাহকে ভয় কর এবং তার নিকট উসিলা তালাশ কর।  বিস্তারিত অবগতির জন্য দেখুন-জা আল হক আল, বাচাঈর; ইস্তাম্বুল; আততাওয়াসসুল বিন্নবী ইস্তাম্বুল, তুর্কী; রহমতে খোদার উসিলা এ আউলিয়া ইত্যাদি।

★নজদী ওহাবী আকীদা-০৭

হুযুর পুরনুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লমের রওজা শরীফ, নবী-অলীগণের রওজা শরীফের যিয়ারত শিরক এবং এতদুদ্দেশ্যে সফর করা বিদআত। (ফিতনাতুল ওহাবীয়া পৃষ্ঠা ৬৬; আততাওয়াসসূল বিন্নবী পৃষ্ঠা ১১১)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

ইসলামী শরীয়তে কবর যিয়ারত সুন্নাত; আর হুযুর পুরনুর সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের যিয়ারত উত্তম ইবাদত ও সর্বোত্তম মুস্তাহাব, বরং ওয়াজিবের কাছা কাছি। (নুরুল ইজাহ, পৃষ্ঠা ১৮১)। অনুরূপভাবে অপরাপর নবী আলাইহিমুস সালাম ও আউলিয়া কেরামের মাজার শরীফ যিয়ারত সুন্নাত এবং সাওয়াবের কাজ। বিস্তারিত দেখুন-জা'আল হক শেফাউচ্ছেকাম, ইস্তাম্বুল, তুর্কী।

★নজদী ওহাবী আক্বীদা-০৮

উসীলা গ্রহণের বেলায় হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবী-অলীগণকে আহবান করা (যেমন ইয়া রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম, ইয়া গাউসে আযম দস্তগীর ইত্যাদি) শিরক। ফিতনাতুল ওহাবীয়া পৃষ্ঠা ৬৬)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

উসিলা গ্রহণের বেলায় ইয়া রাসুলাল্লাহ বলা  নিসন্দেহে যায়েয। হুজুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক আন্ধ ব্যক্তিকে চোখ ফিরিয়ে পেতে যে পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছেন, তন্মধ্যে স্বয়ং তিনি এভাবেই আহবান করতে বলেছিলেন। অনুরূপ ভাবে সাধারণ মুসলমানদের কবর যিয়ারতের বেলায়ও বর্ণিত আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুুর। তিরমিযী শরীফ)। বিস্তারিত দেখুন জা'আল হক; আনওয়ারুল ইন্তেবাহ ফী হিল্লে নেদায়ে ইয়া রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম। ফতোয়া-এ-আলমগীরি, কছীদায়ে বোরদা,কছিদায়ে ইমাম জয়নুল আবেদীন রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু, কছিদা নোমান (আবু হানিফ রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহু) ইত্যাদি।

★নজদী ওহাবী আক্বীদা-০৯

হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম-নবী ও অলীগণের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা ও শাফায়াত কামনা করা শিরক। ফিতনাতুল ওহাবীয় পৃষ্ঠা ৬৭)

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

মুসিবতের সময় আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের সাহায্য প্রার্থনা করা জায়েয। হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন তোমাদের কেউ কোন বস্তু হারিয়ে ফেলবে, আর সাহায্য চাইবে এমতাবস্থায় যে, সেখানে কোন আপনজন নেই। তখনই এভাবে আহবান করবে, হে আল্লাহর বান্দাগণ। আমাকে সাহায্য করুন। নিশ্চয় আল্লাহর এমন কিছু বান্দা আছেন যাদের তোমরা দেখনা। (আমলুল ইয়াওম ওয়াল লাইলাঃ ইমাম আবু বকর ইবনুচ্ছুমী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, আলকালিমাতুত তাইয়্যিব ইবনুল কাইয়ুম ফিতনাতুল ওহাবীয়া, পৃষ্ঠা ৭) বিস্তারিত দেখুন জা'আল হক, আল ইস্তেমদাদ কৃত: ইমাম আহমদ রেযা খান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি; শেফাউচ্ছেকাম কৃত: ইমাম তকীউদ্দীন ছুবকী ইত্যাদি।

শাফায়াতের ক্ষেত্রে শেখ নজদী যেসব আয়াতের আশ্রয় গ্রহণ করেছে সেসব আয়াত মূর্তি পূজক মুশরিকদের সম্পর্কে অবতীর্ণ। এসব আয়াতকে ঈমানদার মুসলমানদের উপর প্রয়োগ করা খারেজীদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা। (বোখারী শরীফের ২য় খন্ড খারেজীদের বর্ণনা অধ্যায়)। খারেজী সম্পর্কে হযরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমার বর্ণিত হাদিস অক্ষরে অক্ষরে আজও সত্য প্রমাণিত হচ্ছে।

© (সংকলন- ইসলামের মূলধারা ও বাতিল ফিরকা।
লেখকঃ- মাওলানা কাযী মঈন উদ্দিন আশরাফী)।
★ পোস্টটি শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ করার অনুরোধ রইল।
আমাদের সাথে থাকুন।

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

ছবছে আওলা ও আ'লা হামারা নবী।

পিডিএফ বই ২৮ টি একত্রে।

খাজা গরীবে নেওয়াজ এর জিবনী।