নামাজের ছানা,দরুদ শরীফ, দোয়ায়ে মাসূরা।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি।
#নামাজের_ছানা_তাশাহুদ_দরুদ_শরীফ_দোয়ায়ে_মাসুরা।
سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَا لَى جَدُّكَ وَلاَ اِلَهَ غَيْرُكَ
উচ্চারণ: সুবহানাকা আল্লাহুমা ওয়া বিহামদিকা ওয়াতাবারা কাসমুকা ওয়া তায়ালাজাদ্দুকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুকা।
অনুবাদ: হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র সকল প্রশংসা তোমারই। তোমার নাম মঙ্গলময়। তোমার মহিমা অতীব উচ্চ। তুমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই।
#হকুমঃ এ টি পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। অবশ্যই পড়তে হবে।
#আত্তাহিয়াতু
আসলে এটির নাম আত্তাহিয়াতু নয় বরং সহিহ হাদিস মতে নাম হলো তাশাহুদ। যেহেতু এটির মাধ্যমে বান্দা মহান আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় এবং হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল বলে শাহিদ(সাক্ষ্য)বা স্বীকৃতি দেয় তাই এটির নাম তাশাহুদ। তবে কেউ কেউ আত্তাহিয়াতু শব্দটি বিদ্যমান থাকায় এটিকে এ নামেও অবহিত করেন।
اَلتَّحِيَّاتُ لِلهِ وَالصَّلَوَاةِ وَالطَّيِّبَاتُ اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ اَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُه‘ – اَلسَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّا لِحِيْنَ – اَشْهَدُ اَنْ لاَّ اِلَهَ اِلاَّ اللهُ وَاَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدً عَبْدُه‘ وَرَسَوْلُه‘
উচ্চারন: আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত্তায়্যেবাতু আস্-সালামু আলাইকা আইয়ু্যহান্নাবীয়ু্য ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু, আস্-সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহীন। আশহাদু আল-লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।
অনুবাদ: প্রশংসা, ইবাদাত,পবিত্রতাসহ সর্বপ্রকার ইবাদতই আল্লাহর জন্য। হে নবী, আপনার উপর আল্লাহর কৃপা,বরকত এবং শান্তি বর্ষিত হোক। আমাদের উপর এবং আল্লাহর পূণ্যবান বান্দাগণের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কেহ উপাস্য নাই। আমি আরও সাক্ষ্য দিতেছি যে, নিশ্চই মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) তাঁহার বান্দা ও রাসূল।
#হকুমঃ এটি পড়া ওয়াজিব।
না পড়লে বা কোন ভুলে শব্দ ছুটে সাহু সিজদা দিতে হবে।
#বিশেষ_একটি_মাসআলাঃ এখানে আসসালামু আলাইকা ইয়া আয়্যুহান নাবীয়্যু(হে নবী আপনার উপর সালাম) বলার সময় স্বযত্নে,স্বজ্ঞানে,সৎ মন মানসিকতায় পরম শ্রদ্ধা ভরে সালাম দিতে হবে।
ওহাবীদের একটি আকিদা হলো তারা বলে কেউ যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে খেয়াল করে সালাম দেয় সেটি গরু,গাধা,ঘোড়ার খেয়াল আসা থেকে মারাত্মক। (বারাহিনে কাতেয়া)।
এটি হলো তাদের বুঝার ভুল। অথচ নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হাজের নাজের জেনে সালাম দিবার জন্যই মহান আল্লাহ এ সালামকে ওয়াজিব করে দিলেন।
#দুরূদ_ইব্রাহিম
আসলে এ দরুদ শরীফ সহিহ হাদীসে দরুদে ইব্রাহিম নামে কোথাও উল্লেখ হয়নি।
হাদীসে পাকে এটির নাম পাওয়া যায় দরুদে তাশাহুদা। যেহেতু এটিতে উলুল আজম পয়গম্বর হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লামের নাম উল্লেখিত আছে তাই এটি পরবর্তীতে দরুদে ইব্রাহিমী নামে প্রসিদ্ধ লাভ করে।
اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَ اهِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَ اهِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ
উচ্চারনঃ আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লায়তা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম। ইন্নাকা হামিদুম্মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ ।
অনুবাদঃ যে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ রহমত অবতীর্ণ কর যেইরূপ রহমত হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ। নিশ্চই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম । হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ বরকত দান কর যেরূপ বরকত ইব্রাহীম (আঃ) এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ । নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম।
#হকুমঃ এটি পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা(ওয়াজিব)। একশ্রেণীর নামাজী এ দরুদ শরীফ ছাড়া অন্য কোন ধরনের দরুদ পড়তে না রাজ। অথচ সহিহ শুদ্ধ অর্থবহ আরো হাজারো দরুদ শরীফ আছে। শুধু তাই নয় মহান আল্লাহ কিতাবুল্লাহ যেমন ৩০ পারায় বিভক্ত এমনই ৩০ পারায় বিভক্ত করে #মজমুয়ায়ে_সালাওয়াতে_রাসুল নামে একটি দরুদ শরীফের কিতাব রয়েছে। যা খতম পড়ে দোয়া করলে যে কোন হক দোয়া কবুল হয়। মূলত তারা দরুদে ইব্রাহিম কে ভালোবাসে এমনটি নয়। তারা এটিও পড়ে বন বন করে মশা মাছির মত। যে কোন দরুদ পড়লে তাদের গায়ে জ্বালা ধরে। এটি মূলত তাদের নচলের(বংশধারা আব্দুল ওহাব নজদীর) দরুদ বিষেদগার রক্তের প্রভাব।
#দোয়ায়ে_মাসুরা ১
এটি একটি সার্বজনীন দোয়ার মডেল।যেমন নামাজ/ইবাদত একমাত্র মহান আল্লাহর জন্য। এ রহমত বরকতময় নামাজ পেলাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম,সাহাবায়ে কেরাম, তাবে তাবীয়িন, সালফে সালেহিন....... আউলিয়ায়ে কেরামগণের মাধ্যমে আমাদের পূর্ব পুরুষ........ মা বা, দাদা, পর পদা, পর দাদ..... ইত্যাদি উভয় জগতের সকল মুমিন_মুমিনাত, মুসলিমীন-মুসলিমাতের এবং নিজের জন্য একই সাথে দোয়া কামনা করা এবং সেই সাথে শুকরিয়াও জ্ঞাপন করা হয় যাদের উছিলায় আমি আজ মুসলিম ঘরে জন্মগ্রহন করে নামাজ আদায় করতে পারছি। বলতে গেলে সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে কিয়ামত পর্যন্ত এ ভাবে দোয়া চাওয়া হয়।
আমি নিজেও পড়ি, আমার পরিবার পরিজনও পড়ে এবং ভবিষ্যতে আমাদের প্রজন্মকে এভাবে শিখিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।
যেন মরে গেলেও আমার ছেলে মেয়েরা আমাদের পূর্ব পুরুষ সকলের জন্য কিয়ামত পর্যন্ত ৫ নামাজ পড়ে দোয়া কামনা করতে পারে । কারন মানুষ মরে গেলে নেক আমল করার সকল পন্থা বন্ধ হয়ে যায়।
চাইলে আপনিও শিখে আপনার ভবিষ্যতে প্রজন্মকে এভাবে শিক্ষা দিতে পারেন। সব চেয়ে বেশি সুফল ভোগ করবেন আপনি।
#পিতা_মাতার_জন্য_এই_দু_আ_করব
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِىْ وَلِوَ الِدَىَّ وَلِمَنْ تَوَالَّدَ وَ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا وَلِجَمِيْعِ الْمُؤْ مِنِيْنَ وَالْمُؤْ مِنَاتِ وَالْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَالاْاَحْيَاءِ مِنْهُمْ وَالْاَمُوْ اَتْ بِرَحْمَتِكَ يَااَرْحَمَرَّحِمِيْنَ
উচ্চারনঃ আল্লাহুমাগ ফিরলী ওয়ালি ওয়ালিদাইয়্যা ওয়ালিমান তাওয়াল্লাদা
ওয়ার হামহুমা কামা রব্বা ইয়ানি সগিরা
ওয়ালি জামীঈল, মু’মিনীনা ওয়াল মুমিনাত, ওয়াল মুসলিমীনা ওয়াল মুসলিমাত, ওয়াল আহ্ইয়ায়ি মিনহুম ওয়াল আমুয়াত, বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।
অনুবাদঃ হে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালা! আমাকে, আমার পিতা মাতাকে, সন্তান-সন্ততিকে এবং হে আল্লাহ! আপনি তাদেরকে রহমত দান করুন, যেরূপ তাঁরা ছোট অবস্থায় দয়ার সাথে আমাকে লালন-পালন করেছেন এবং সমস্ত মু’মিন পুরুষ ও নারীকে এবং জীবিত মৃত সমস্ত মুসলিম নর-নারীকে ক্ষমা কর।
#দোয়ায়ে_মাসুরা ২
-----------------------------------------------------
اللهم إني ظلمت نفسي ظلما كثيرا ولا يغفر الذنوب إلا أنت فاغفرلي مغفرة من عندك وارحمني إنك أنت الغفور الرحيم
বাংলা উচ্চারণঃ
আল্লাহুম্মা ইন্নী যালামতু নাফসী যুলমান কাসীরাওঁ ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয যুনূবা ইল্লা আন্তা; ফাগফির লী মাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা ওয়ার হামনী ইন্নাকা আন্তাল গফুরুর রাহীম।
-----------------------------------------------------
অর্থঃ
হে আল্লাহ্! আমি আমার নিজ আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি, গুনাহ মাফকারী একমাত্র তুমিই; অতএব তুমি আপনা হইতে আমাকে সম্পূর্ণ ক্ষমা কর এবং আমার প্রতি দয়া কর। তুমি নিশ্চয়ই ক্ষমাশীল দয়ালু।
এটিরই একই #হুকুম এবং সহিহ হাদিসে পাকে বর্ণিত। কোনটিকে অবহেলা করা যাবে না।
এটির অর্থ দেখুন এটি ব্যক্তিকেন্দ্রীক। যে পড়বে শুধু তার জন্য । এতে আপনার আপনজন সম্পৃক্ত নয়। তাই এটি নফল নামাজের ক্ষেত্রে পড়া খুবই ভালো যেমন রাতের অন্ধকারে সালাতুস তাসবিহ, তাহাজ্জুদ ও অন্যান্য নফল নামাজের মধ্যে দো'চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে এ দোয়া যখন পড়া হয় তখন বেশি কবুল হয়।(ব্যক্তিগত মতামত)
-----------------------------------------------------
৩। অথবা নিচের দোয়াটি পাঠ করবেঃ
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِىْ وَلِوَ الِدَىَّ وَلِمَنْ تَوَالَّدَ وَلِجَمِيْعِ الْمُؤْ مِنِيْنَ وَالْمُؤْ مِنَاتِ وَالْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَالاْاَحْيَاءِ مِنْهُمْ وَالْاَمُوْ اَتْ بِرَحْمَتِكَ يَااَرْحَمَرَّحِمِيْنَ
উচ্চারনঃ আল্লাহুমাগ ফিরলী ওয়ালি ওয়ালিদাইয়্যা ওয়ালিমান তাওয়াল্লাদা ওয়ালি জামীঈল, মু’মিনীনা ওয়াল মুমিনাত, ওয়াল মুসলিমীনা ওয়াল মুসলিমাত, ওয়াল আহ্ইয়ায়ি মিনহুম ওয়াল আমুয়াত, বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন ।
-----------------------------------------------------
অনুবাদঃ হে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালা! আমাকে, আমার পিতা মাতাকে, সন্তান-সন্ততিকে, সমস্ত মু’মিন পুরুষ ও নারীকে এবং জীবিত মৃত সমস্ত মুসলিম নর-নারীকে ক্ষমা কর ।
#সুখবরঃ পৃথিবীতে এমন একটি কাজ আছে যেটা আল্লাহ(সৃষ্টিকর্তা) ও বান্দাহ(সৃষ্টি) উভয়ে করেন,খুশি হন। সেটি হলো দরুদ ও সালাম। যেটি নিঃসন্দেহে ও ভুল ত্রটি মুক্ত ভাবে ১০০% কবুল হয়।
তাই আসুন ৫ ওয়াক্ত নামাজের সাথে সাথে বেশি বেশি দরুদ ও সালাম পেশ করি।
Comments
Post a Comment