আলোচ্য হাদিসের পর্যালোচনা
★আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ্★
★প্রজেক্ট- ইসলামের মূলধারা ও বাতিল ফিরকা।
★পোস্ট নং--০৪
★বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
★আলোচ্য হাদিসের পর্যালোনা।
বর্তমান মুসলিম বিশ্বে বিদ্যমান বাতিল ফিরকা তথা- ওহাবী, তাবলিগী, শিয়া, কাদিয়ানী ও মওদুদী মতাবলম্বীগণ সরলপ্রাণ মুসলমানদেরকে ধোকা দেয়ার লক্ষ্যে বলে বেড়ায় যে, হাদিসে বর্ণিত বাহাত্তর জাহান্নামী দল অনেক আগেই অতীত হয়ে গেছে। কারণ, ব্যাখ্যা গ্রন্থে তার একটা তালিকা পেশ করা হয়েছে। "মিরকাত শরহে মিশকাত' কৃতঃ মোল্লা আলী ক্লারী হানাফী ও ‘তালবিস-এ-ইবলিস' কৃতঃ ইমাম ইবনে যাওযী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি দুটিতে বাহাত্তর বাতিল ফিরকার ফিরিস্তি প্রদান করেছেন। সুতরাং ওহাবী, তাবলিগী ও মওদুদী ইত্যাদি জাহান্নামী দলের আওতাভুক্ত নয়।
★এর জবাব
প্রথমতঃ হাদিসে খারেজীদের বেলায় হুযুর সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, এদের শেষাংশ দাজ্জালের সাথে মিলিত হবে। (মিশকাত শরীফ)। সুতরাং প্রমাণিত হলো, ভ্রান্ত দল প্রত্যেক যুগেই থাকবে।
দ্বিতীয়তঃ হাদিস বিশারদগণ আরবী পরিভাষার আলোকে বলেছেন, আলোচ্য হাদিসে বাহাত্তর সংখ্যাটি নির্দিষ্ট সংখ্যা বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত নয়, বরং আধিক্য' বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত। অর্থাৎ আমার উম্মতে অসংখ্য বাতিল জাহান্নামী দলের আবির্ভাব হবে। এটাই হাদিসের সারমর্ম। (মিরকাত শরহে মিশকাত)
তৃতীয়তঃ তাদের উপরোক্ত উক্তিটা নিজেদের ভ্রান্তিকে চেপে রাখার অপপ্রয়াস মাত্র। কারণ, হাদিসের অৰ্থ যদি এই হয় যে, বাতিল দল মাত্র বাহাত্তরটিই হবে, এর অধিক হবে না, তাহলে এ অর্থটিই গ্রহণ করতে হবে যে, বাহাত্তর’ সংখ্যাটি যখন পূর্ণ হয়ে গেছে আর কোন ভয় নেই। যতই ভ্রান্তি আর গোমরাহী হোক না। কেন তা জাহান্নামী দলের অন্তর্ভুক্ত হবে না। অতএব, এ ধ্যান-ধারণা সম্পূর্ণ অমূলক এবং চরম গোমরাহী। কোন দল বা সম্প্রদায় পথভ্রষ্ট ও জাহান্নামী বলে বিবেচিত হওয়া কোন সময় সীমা বা সংখ্যার উপর নির্ভর করে না, বরং তার আকীদা-বিশ্বাস, উক্তি ও কর্ম কোরআন-সুন্নাহ ও সালফে সালেহীনের মতানুযায়ী হওয়া না হওয়ার উপর নির্ভরশীল। অন্যথায় কাদিয়ানী সম্প্রদায়কেও জাহান্নামী বলা যাবে না। কারণ, এ দলের আত্মপ্রকাশ তো আপত্তিকারীদের বাহাত্তর সংখ্যা পূর্ণ হবার অনেক পরে ঘটেছে।
চতুর্থতঃ হাদিসে উল্লেখিত "বাহাত্তর ফিরকা দ্বারা মূল দলগুলোকে বুঝানো হয়েছে। অতঃপর এদের ভ্রান্ত মূলনীতিমালার সব মূল দলের শাখা-প্রশাখার আবির্ভাব ঘটতে থাকবে। মিরকাত শরহে মিশকাত, তালবিস-এ- ইবলিস ও কিতাবুল মিলাল ইত্যাদি কিতাবে উল্লেখিত অগণিত বাতিল ফিরকার তালিকা তার উজ্জ্বল প্রমাণ।
( সংকলন- ইসলামের মূলধারা ও বাতিল ফিরকা- লেখকঃ- মাওলানা কাযী মঈন উদ্দিন আশরাফী।)।
Comments
Post a Comment