নাহরাওয়ানার যুদ্ধ ও খারেজিদের বিরুদ্ধে ইমামগনের অভিমত।

★আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ্।
★ প্রজেক্ট- ইসলামের মূলধারা ও বাতিল ফিরকা★
★ পোস্ট নং--১২

★বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

★খারেজিদের বিরুদ্ধে নাহরাওয়ানার যুদ্ধ।

হযরত আলী রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহু সাহাবা কেরামের পরামর্শক্রমে খারেজীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বেরিয়ে পড়লেন। তিনি সৈন্য বাহিনী নিয়ে নাহরাওয়ান পৌছেন। প্রথমে তিনি নসিহত এবং হুমকির মাধ্যমে যুদ্ধের কাজ শুরু করেন।তিনি  প্রাথমিক উদ্যোগ হিসেবে ঘোষণা দিলেন, “যে ব্যক্তি কুফা চলে যাবে, সে নিরাপদ”।

এ ঘোষণা তীরের মত কাজ করলো। ফলে পাঁচশ জনের মত খারেজী হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর দলে প্রবেশ করলো; আর কিছু সংখ্যক কুফা গমন করলো। তখন খারেজীদের সংখ্যা দাড়ালো চার হাজারে। হযরত আলী
রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর সৈন্য বাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণে ওরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ল। এ যুদ্ধে যদিও তাদের শক্তি হ্রাস পেয়েছে; কিন্তু তারপরও তারা বিভিন্ন স্থানে ফেতনা-ফাসাদে লিপ্ত ছিল। তারা হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে দেয়নি। অবশেষে তাদেরই একজন আবদুর রহমান ইবনে মলজুম বা বলজম ফজরের নামাযরত অবস্থায় হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুকে শহীদ করল। (ইন্না লিল্লাহে ওয়া-ইন্না-ইলাইহে রাজেউন)। (তারিখে ইসলাম কৃতঃ মুফতি আমীমুল ইহসান)।

★খারেজিদের কুফরী সম্পর্কে ইমামদের মতামত।
হযরত আমীরে মুয়াবীয়া, ওবায়দুল্লাহ ইবনে যিয়াদ এবং ইয়াযিদের নানা আক্রমণের কারণে খারেজীরা কিছুদিন গোপনভাবে শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে।
অতঃপর মারওয়ানের সময়কালে খারেজীগণ ইরাকে নাফে ইবনে আযরাক এবং ইয়ামামায় নাজদা ইবনে আমেরের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে। আর নজদী খারেজী মতবাদে নিম্ন বর্ণিত ভ্রান্ত আকীদাগুলো সংযোজন করে-

(১) যে মুসলমানদের (অর্থাৎ যারা খারেজী নয়) বিরুদ্ধে যুদ্ধে বের হবে না সে কাফের। যদিও সে অপরাপর খারেজী আকীদাসমূহ পোষণ করে।

(০২) বিবাহিত ব্যক্তি যেনা করলে শরীয়ত মোতাবেক পাথর নিক্ষেপের বিধানের রহিতকরণ।

(০৩) চোরের হাত বগল পর্যন্ত কর্তন।

(০৪) ঋতুস্রাব চলাকালীন মেয়েদের উপর নামায ফরয।

(০৫) শক্তি সামর্থ থাকা সত্ত্বেও যে ভাল কাজের নির্দেশ এবং মন্দ কাজ হতে নিষেধ পরিহার করবে সে কাফের। আর যদি সামৰ্থ না থাকে তাহলে সে কবীরা গুণাহ করল।

(০৬) কবীরা গুণাহকারী কাফের।

(০৭) যে ব্যক্তি ছগিরা গুণাহ করবে তাকে আগুন ছাড়া অন্যসব শাস্তি দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি সর্বদা ছগিরা গুণাহ করবে সে কবীরা গুণাহকারীর মত এবং সর্বদা জাহান্নামে থাকবে।

(০৮) খারেজীদের অনেকে নামায পাঁচ ওয়াক্ত হওয়াকে অস্বীকার করে এবং বলে বেড়ায়-নামাজ দুই ওয়াক্ত ফরয, (১) ফজর ও (২) এশা।

(০৯) কেউ কেউ আবার ছেলে-মেয়ে, নাতনী, ভাতিজী ও ভাগিনী বিয়ে করাকে জায়েজ মনে করে।

(১০) সুরা ইউসুফ কোরআনের অন্তর্ভুক্ত নয়।

(১১) যে ব্যক্তি শুধু লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলল সে আল্লাহর নিকট মুমিন হিসেবে পরিগণিত। যদিও আন্তরিকভাবে কুফরী আক্বীদা পোষণ করে। (ফতহুল বারী শরহে বোখারী, পঞ্চদশ খণ্ড পৃষ্ঠা ৩১২)।

(সংকলন- ইসলামের মূলধারা ও বাতিল ফিরকা।
লেখকঃ- মাওলানা কাযী মঈন উদ্দিন আশরাফী)।
★ পোস্টটি শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ করার অনুরোধ রইল।
আমাদের সাথে থাকুন-
facebook.com/meitobimarenabiho

Comments

Popular posts from this blog

ছবছে আওলা ও আ'লা হামারা নবী।

পিডিএফ বই ২৮ টি একত্রে।

খাজা গরীবে নেওয়াজ এর জিবনী।